১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ ঢাকা ডিএমপিতে সুস্থ ৭৬ শতাংশ, বেশি মৃত্যুর সংখ্যাও
২২, জুন, ২০২০, ১:৪২ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

মহামারী করোনায় জননিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করে সম্মুখযোদ্ধার খেতাব পাওয়া পুলিশের আক্রান্তের সংখ্যা গতকাল রবিবার পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৮৮৭৮ জনে যা একক পেশা হিসেবে সর্বোচ্চ।

রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে অনুসারে ইতোমধ্যে সেরে উঠেছেন ৫৪০৮ জন। সে হিসাবে সারাদেশে আক্রান্ত পুলিশের প্রায় ৬০.৯১ শতাংশই ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন।

পরিসংখ্যান বলছে এক হাজার আক্রান্ত পুলিশের মধ্যে মৃতের সংখ্যা চার জনের কাছাকাছি। মৃত্যু হারের দিক থেকেও একক পেশা হিসেবে পুলিশই প্রথম স্থানে রয়েছে। সারাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৩১ জন পুলিশ সদস্য।

এদিকে করোনা বেশ শক্তি নিয়েই হামলে পড়েছে বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট হিসেবে পরিচিত ডিএমপির সদস্য ও কর্মকর্তাদের মাঝে।
মহামারী করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশর। এ পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরতদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২১২০ জন সদস্য।

কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও ইমপালস হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিক চিকিৎসায় ইতোমধ্যে ডিএমপির ১৬১২ জন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত বিবেচেনায় ডিএমপিতে সুস্থতার হার ৭৬.০৩ শতাংশ। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে ডিএমপির ১৫ জন অকুতোভয় পুলিশ জীবন উৎসর্গ করেছেন। আক্রান্ত বিবেচনায় ডিএমপিতে মৃত্যুর হার ০.৭ শতাংশ।

আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) সার্বক্ষণিক তদারকি চালিয়ে যাচ্ছেন।

করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দুই লক্ষাধিক নিবেদিত প্রাণ পুলিশ সদস্য সামনের সারিতে থেকে জনগণের সেবা করে আসছেন।

বাংলাদেশ পুলিশের এতো সংখ্যক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হলেও থমকে যায়নি জননিরাপত্তা নিশ্চিত সহ করোনাকালীন পুলিশী সেবা। বরং ক্ষেত্রবিশেষে পুলিশের কর্তব্যপরায়ণতা বেড়েছে বহু গুন।

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই বিরামহীনভাবে করোনা প্রতিরোধে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সময়োপযোগী দিকনির্দেশনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সুস্থ করতে শশব্যস্ত পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগনও।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার), ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম(বার) সহ বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের পাশে থেকেছেন পরম মমতায়, সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছেন তাদের সুস্থ করতে, সাহস যুগিয়েছেন আক্রান্তদের। এর বাইরে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সুস্থ করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছেন রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তাগন। তাঁদের আন্তরিকতা ও আপ্রাণ প্রচেষ্টায় দলে দলে সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকার কারণ সম্পর্কে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার ( সদরদপ্তর ও প্রশাসন) মোঃ আনিসুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) ডিএমপি নিউজকে জানান, ফোর্সের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) মহোদয় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহন করেছন। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মাঝে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রী, পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডিএমপির সব পুলিশ মেসে মৌসুমী ফল, পুষ্টিকর খাবার, ভিটামিন সি ও ডি যুক্ত খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। ইমিউনিটি বৃদ্ধির জন্য ঔষধ সরবরাহ করা হয়েছে ফোর্স ও ককর্মকর্তাদের মাঝে। এছাড়াও যোগ ব্যায়াম ও শরীরচর্চার আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদরদপ্তর) শাহ মিজান শাফিউর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা ডিএমপি নিউজকে বলেন, পুলিশ ব্যারাকসহ সকল অফিস ও পুলিশ লাইন্সগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও ডিএমপি কমিশনার স্যার সিনিয়র অফিসারদের সমন্বয়ে কয়েকটি টিম গঠন করে দিয়েছেন যাঁরা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধি করতে নিয়মিত তাদের সাথে স্বশরীরে দেখা করছেন ও তাদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছেন।

তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনার স্যারের নির্দেশনায় এসব নানাবিধ বাস্তবমূখী উদ্যোগের ফলে ডিএমপিতে আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার অনেকাংশে বেশি।

এই সাফল্য গোটা পুলিশ বাহিনী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ডিএমপি সদরদপ্তরের এই উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।

 

সূত্র, DMP news