১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ বিশেষ সংবাদ, সারা বাংলা ♥আজ বিশ্ব বাবা দিবস.. =================♥
২০, জুন, ২০২১, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ - প্রতিনিধি:

♥আজ বিশ্ব বাবা দিবস..
=================♥
যে মানুষটি আপনার জন্মের পর থেকে নিজের প্রয়োজনটুকুর কথা চিন্তা করেননি কখনও। পুরোনো জামা গায়ে, কয়েক দফায় সেলাই করা জুতোটা পরে অফিসে যাওয়া, ঘেমে নেয়ে বাসে ঝুলতে ঝুলতে বাড়ি ফেরা আর অবশ্যই ফেরার সময় দুহাত ভরে আপনার পছন্দের খাবারগুলো নিয়ে আসা এইতো নিত্যদিনের অভ্যাস।
তিনি বটবৃক্ষ, নিদাঘ সূর্যের তলে সন্তানের অমল-শীতল ছায়া তিনি বাবা। বিশ্বাস আর পরম নির্ভরতার প্রতীকের নাম বাবা। আজ বিশ্ব বাবা দিবস। প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার এই দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর রোববার হিসেবে আজ ২০ জুন পালিত হচ্ছে দিবসটি। বছরের এই একটি দিনকে প্রিয় সন্তানরা আলাদা করে বেছে নিয়েছেন।
সারা বিশ্বের সন্তানেরা পালন করেন এই দিবসটি। পিতার প্রতি সন্তানের সম্মান, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দিনটি বিশেষভাবে উৎসর্গ করা হয়ে থাকে। সন্তানরা তাদের প্রিয় জন্মদাতার জন্য নানা উপহার কিনবে, দিবে। যাদের বাবা বেঁচে নেই, তারা হয়তো আকাশে তাকিয়ে অলক্ষ্যে বাবার স্মৃতি হাতড়াবে, আমার মতো যাদের বাবা নেই তারা মনে করি বাবা নেই মানে মাথার উপর আকাশ নেই…
বাবা একটি মধুর ডাক। বাবা একটি মধুর সম্পর্কের নাম। পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, তবে একজনও খারাপ বাবা নেই। পরিবারের শত অনটনের মাঝেও যার কথায় পুরো নির্ভর করা যায়, সে তো বাবা। বাবা বাড়িতে আছেন মানে পুরো পরিবার নিরাপদ।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিক থেকে বাবা দিবস পালন শুরু হয়। আসলে মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকে এটির শুরু।
ধারণা করা হয়, ১৯১০ সালের ১৯ জুন থেকে বাবা দিবস পালন করা শুরু হয়। শুরুর দিকে বাবা দিবস বেশ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই পালিত হতো! মা দিবস নিয়ে মানুষ যতটা উৎসাহ দেখাতো, বাবা দিবসে মোটেও তেমনটা দেখাতো না, বরং বাবা দিবসের বিষয়টি তাদের কাছে বেশ হাস্যকরই ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থা পাল্টায়, ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করার জন্য একটা বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯২৪ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন।আর তাই বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
সন্তানের জন্য বাবার ভালোবাসা সীমাহীন। নিজের সন্তানের জন্য মোগল সম্রাট বাবরের ভালোবাসার উদাহরণ ইতিহাস হয়ে আছে। সম্রাট বাবর নিজের সন্তান হুমায়ূনের জন্য নিজের জীবন উতসর্গ করতে প্রস্তুত ছিলেন। এমন স্বার্থহীন যার ভালোবাসা সেই বাবাকে সন্তানের খুশির জন্য জীবনের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। বাবা দিবসের প্রাক্কালে সন্তানের সামনে সুযোগ আসে বাবাকে অন্তরের গভীর থেকে কৃতজ্ঞতা জানানোর। আমাদের সবার উচিত বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া। সন্তান যত বড়ই হোক না কেন তার অভিমান আর অবহেলার পরিমাণ যত বিশালই হোক বাবার স্নেহ সবসময় তার জন্য এক পরম আশ্রয়। বেঁচে থাকার আনন্দে, কষ্টের তীব্রতায়, কঠিন সমস্যায় বাবাই হয়ে ওঠেন বিপদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু বা সহায়। অন্যদিকে সন্তান হিসেবে আপনাকে ভাবতে হবে বাবার কথা। তার আবেগ অনুভূতি আর পরিণত বয়সের চাওয়া পাওয়াগুলোর দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। এ কথা সবাইকে অবশ্যই মানতে হবে, মানব জীবনে বাবার অবদান এবং গুরুত্ব অপরিসীম।
আমাদের দেশেও আজকাল বেশ ঘটা করেই বাবা দিবস পালিত হয়ে থাকে। বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দিনটি বিশেষভাবে উতসর্গ করা হয়ে থাকে। যদিও বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দিনটি বিশেষ ভাবে উদযাপনের প্রয়োজন হয় না। তার পরেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশে এখন বাবা দিবস পালন করা হয়।
আমাদের দেশেও এই বাবা দিবসের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে তাই বাবা দিবসে শ্রদ্ধা আর ভালবাসা পূর্ণতাপাক, দৃঢ় হোক পরিবারের বন্ধন।

পৃথিবীর সব বাবার প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ♥♥