চীফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যেন ঘুষের হাট। নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে এই অফিসটি। জমি দলিল করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন মানুষ। গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা,এমনই অভিযোগ জানায় সেবাগ্রহীতা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।
জানা গেছে, দুদকের অভিযান এমনকি আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতেও বন্ধ হয়নি দুর্নীতি। দলিল প্রতি সরকারী ফির অতিরিক্ত সাড়ে চার হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। একেক সপ্তাহ এক এক জন দলিল লেখক এর মাধ্যমে এই টাকা নেন সাব-রেজিষ্টার আজমেরী নির্জর। দলিল লেখক এর নিকট টাকা না দিলে দলিল রেজিষ্ট্রি করেন না তিনি। আরো জানা গেছে, বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার আজমেরী নির্জর এর পূর্বে রায়হান হাবিব থাকাকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে লিখিত অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নেমে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে মানুষকে হয়রানি এবং অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধে অভিযুক্তদের সতর্ক করা হয়। বর্তমান সাব-রেজিষ্টার যোগদান করে দুদকের বিষয়টি অবগত থাকার পরেও বন্ধ হয়নি দুর্নীতি।
জৈনপট্টির সাবিকুন্নাহার জানান, তিনি একটি দলিল করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। সরকারী ফ্রি ছাড়াও চার হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে দলিল করেছেন তিনি। এমন আরও অসংখ্য মানুষের অভিযোগ। সামান্য ত্রুটিতেও দলিল আটকে দেন সাব-রেজিষ্টার। ঘুষ দিলে ঠিকই তিনি দলিল সম্পাদন করেন। এদিকে অতিরিক্ত টাকা ঘুষ নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন অফিসের কয়েকজন দলিল লেখক।
সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদন করতে আসা একাধিক দাতা গ্রহিতা নাম প্রকাশ না করার অনিচ্ছুক জমির কাগজে সামান্য বানানে একুট ভুল থাকলেই ঘুষ দিয়ে দলিল করতে হয়। নকল নবশদিরে কাছে গিয়ে হয়রানি হচ্ছেন মানুষ। সরকারী ফি যেখানে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা (বড় দলিল) সেখানে টাকা নিচ্ছেন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। তল্লাশিতেও চলছে হয়রানি। শ্রেণি পরবর্তন করে মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ঘুষ ছাড়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কোন কাগজই নড়েনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক বলেন, এই দেশের কোনো সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ঘুষ চলেনা। কিন্তু ধোবাউড়ায় চলে আর আমরা সারাদিন দলিল করে সন্ধায় চাউলের পয়সা নিয়ে বাড়ী ফিরতে পারিনা।
এ বিষয়ে সাব রেজিস্ট্রারকে মুঠো ফোনে ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।