তথ্য প্রতিদিন ডেস্ক =
তালাবদ্ধ ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে ওরনা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মুক্তাগাছার আরকে সরকারী হাই স্কুলের ৭ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী উমামা তাসনিম। সে ঐ স্কুলেরই সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম রুবেলের মেয়ে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে যমুনাসিংয়ের মোড় এলাকায়। পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়,ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা আরকে সরকারী হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম রুবেল প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। উমামা প্রথম স্ত্রীর একমাত্র মেয়ে। তার পরের স্ত্রীর ১টি ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সে কয়েক বছর ধরে শহরের যমুনাসিংয়ের মোড় এলাকায় জনৈক রুহল আমীনের বহুতল ভবনের নিজ তলায় বসবাস করে আসছে।
শনিবার দুপুরে রবিউল ইসলাম রুবেল তার স্ত্রী দিলরুবাকে নিয়ে বিয়ের দাওয়াত খেতে যাওয়ার এসময় উমামা ও ছেলে দিশাকে বাসায় রেখে বাহির থেকে তালা দিয়ে যান। বিকেলে তারা বাসায় ফিরে দেখেন উমামার গলায় ওড়না পেঁচানো তার দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। পরে তাকে মুক্তাগাছা হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের গলায় একাধিক দাগ বিদ্যমান থাকায় প্রত্যক্ষদর্শী ও উমামা তাসনিম এর মামা এডভোকেট রেজাউল করিম রেজার ধারণা আত্মহত্যার কথা বলা হলেও তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এলাকাবাসী ও মেয়ের স্বজনরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে তার সৎ মা দিলরুবা খাতুন উমামাকে নানা কারণে নির্যাতন করত। বিভিন্ন সময় তার কান্নার আওযাজ শুনতে পেত পাশের বাড়ির লোকজন। তাদের ধারণা তার সৎ মায়ের নির্যাতনের কারনেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত উমামা তাসনিমের বাবা স্কুল শিক্ষক রবিউল ইসলাম রুবেল বলেন, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাকে বিভিন্ন সময় শাসন করা হত। একজন বাবা-মা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এটা করতেই পারে। সামান্য এ কারণে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে স্বপ্নেও এটা ভাবিনি।
ঘটনা স্বীকার করে থানার ওসি আলী মাহমুদ বলেন, মেয়েটি স্কুলের দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর সাথে ফোনে কথা বলায় তার সৎ মা মেয়েটিকে কয়েকদিন ধরে মারধর করে আসছে। আজও তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। এমনকি তার লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়ার কথাও বলা হয়। এ কারণেই হয়ত মেয়েটি আত্মহত্যা করতে পারে। এছাড়া হত্যারও কিছু আলামত রয়েছে তার শরীরে। তার বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।