ছাত্রলীগের রাজনীতির পথ ধরে যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ও নিবেদিত শফিকুল ইসলাম মানিক। তিনি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের জনপ্রিয় একজন নেতা। তিনি বর্তমানে গ্রুপিং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার রোষানলে পড়ে এলাকাছাড়া। গত ২৯ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ সদরের গাইটালে একজন ডাক্তারের সাথে এলাকাবাসীর দ্বন্দ্বের জেরে যুবলীগ নেতা মানিককে জড়িয়ে একটি মামলা হয়। ঘটনায় মানিকের সম্পৃক্ততা না থাকলেও একটি মহল তাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদরের গাইটাল ডুবাইল রোডের বাসিন্দা ডাঃ মুক্তা সুলতানা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসায় হোম কোয়ারিন্টাইনে ছিলেন। প্রশাসন বাড়িটিকে লকডাউন ঘোষনা করলেও নিচ তলায় বসবাসকারী ডাঃ মোঃ সাদেক হোসেন শাকিল কর্মস্থলে যাতায়াতে করতেন। তিনি এলাকার চায়ের দোকানেও যাতায়াতে করতেন। এলাকাবাসী তাকে সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহন করে চলাচলের জন্য বলেন। এ নিয়ে ডাক্তার শাকিল ও এলাকাবাসী তথা যুবকদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
২৯ এপ্রিল ডাক্তার শাকিল কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। সে সময় ডুবাইল মোড়ে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছিলো। ডাক্তার শাকিলের গাড়ি থেকে নেমে আসা অজ্ঞাত ৩/৪ জন লোক যাবার সময় একজন ত্রাণ গ্রহনকারীর সাথে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে ত্রাণ বিতরনকারী স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে ডাঃ শাকিলের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তিনি একজনের কলার ধরে কিল ঘুষিও মারেন বলে জানা গেছে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া অভিযোগে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে থাকলেও শফিকুল ইসলাম মানিক বিষয়টি তাৎক্ষণিক সমঝোতার লক্ষে উত্তেজিত এলাকাবাসীকে ও ডাক্তার শাকিলকে সরিয়ে দেন, শান্ত থাকার অনুরোধ করেন।
এদিকে, ওইদিনই কিশোরগঞ্জ সদর থানায় যুবলীগ নেতা মানিককে আসামি করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন ডাক্তার শাকিল। যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম মানিকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক এ মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ৬ মে সাংবাদিক সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয় এলাকাবাসী ও তার আত্মীয় স্বজন সূত্র জানায়। তবে সংবাদ সম্মেলন পন্ড করায় স্থানীয় জনতা ও পুলিশের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ ফাঁকা গুলি বর্ষন করে ও তিনজনকে আটক করে। এ সময় শফিকুল ইসলাম মানিক এলাকায় না থাকলেও তাকে আটক করার অজুহাতে থানা পুলিশ তাদের সংবাদ সম্মেলনকে পন্ড করে দিয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এ ঘটনায় পুলিশ কিশোরগঞ্জ সদর থানায় সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে মানিকসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০০/১২০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৭, তারিখ ৭ মে। পুলিশের করা এ মামলায় গাইটাল নামাপাড়া এলাকা বর্তমানে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনা সম্পর্কে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগ সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এডভোকেট মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল বলেন, ডাক্তারের সাথে মানিকের কোন ধরনের হাতাহাতি-মারামারির ঘটনা ঘটেনি। মানিকের বিরুদ্ধে যে মামলা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। মানিক দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সে ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা একজন জনপ্রিয় নেতা। সাংগঠনিকভাবে একজন দক্ষ রাজনীতিক।
যুবলীগ যুগ্ন আহবায়ক এডভোকেট সোহেল আরো বলেন, মানিকের নামে যে দুটি মামলা দেয়া হয়েছে সেটি মিথ্যা। ঘটনাস্থলে মানিক ছিলেন না। তারপরও তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তার বাসায় গেলে এলাকার মহিলারা পর্যন্ত প্রতিবাদী হয়ে আসে। পুলিশও হয়তো এটি ভাবতে পারিনি। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে জনগণ উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত।
এই ঘটনায় শুধু কিশোরগঞ্জ জেলা নয় পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও আলোচনা সমালোচনা চলছে। “একজন নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিককে ঘায়েল করতে ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কতটা ষড়যন্ত্রের দানা বাধতে পারে এ ঘটনায় তা প্রতিয়মান বলে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে।” “যুবলীগ নেতা মানিকের রাজনৈতিক পথচলা কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগ রাজনীতির প্রবাদপুরুষ কিংবদন্তি নেতা মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিনের সহচর বলে আলোচনা আছে ।” তবে একটি প্রতিপক্ষ মহল মানিককে পরাস্ত করতে ষড়যন্ত্রে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
হয়রানির শিকার যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম মানিক ঘটনার প্রেক্ষিতে কিশোরগঞ্জে অয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের একটি লিখিত অভিযোগে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি করোনা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে ছিলাম শুরু থেকেই। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জন্য মানবিক সহায়তার ডাক দিয়েছেন। সে নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিজের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে অসহায় জনগণকে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে এসেছি। কিন্তু একটি রাজনৈতিক মহল আমাকে ঘায়েল করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ঘটনাকে কাজে লাগিয়েছে বলে দাবি তিনি করেন।