সরকার কর্তৃক পূর্বঘোষিত মূল্যেই ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। কোনোক্রমেই দাম বৃদ্ধি করা হবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। একইসাথে সরকারি গুদামের মজুদ বাড়াতে ধান-চাল ক্রয়ে গতি ত্বরান্বিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর অবৈধ কার্ড বাতিলে শক্ত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি।
বুধবার (১৭ জুন) মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে বরিশাল বিভাগের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সরকারের সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং তত্ত্বাবধানে এবার বোরোতে বাম্পার ফলনে ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে কৃষক। এই বাজার দর ধরে রাখতে সরকারি সংগ্রহের গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া নির্দেশ মোতাবেক খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে। ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়ারও হুশিয়ারী দেন।
চালকল মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন প্রতিবছর সমান লাভ হয় না। এবার করোনাকালীন সময়ে মানুষকে সেবা করার উপযুক্ত সময়, সেবার মন মানসিকতা নিয়ে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা সরকারের তালিকাভুক্ত। সবসময় সরকার আপনাদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করে এবং এবারও আপনারা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চালকল মালিকদের চুক্তি মোতাবেক সঠিক সময়ে চাল দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার সকল ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে। অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন। সরকারিভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি করা কোনোভাবেই হবে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে আপনাদের ব্যবসা সবসময় করতে হবে। অতএব লাভ বেশি হলে চাল সরবরাহ করবেন, আর লাভ কম হলে চাল সরবরাহ করবেন না, এটা হতে পারেনা। আমরা চাই না যেন আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং মিলকে কালো তালিকাভুক্ত করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমাদেরকে সেই রাস্তায় যেতে বাধ্য করবেন না। আপনাদের অতি লোভের কারণে যদি সরকারকে আমদানিতে যেতে হয় তাহলে আপনাদের জন্য তা সুখকর হবে না।
চাল সরবরাহের সময় খাদ্যগুদামের নাম, তারিখ এবং কোন খাতে (খাদ্য বান্ধব, ওএমএস, টিআর, কাবিখা) এটা স্পষ্ট স্টেনসিলের মাধ্যমে অমোচনীয় কালি দ্বারা লিখতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য অধিদপ্তর এবং এর মাঠ পর্যায়ের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ওসিএলএসডি সহ সকল কর্মচারী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন-এজন্য মন্ত্রী তাদেরকে ধন্যবাদ জানান। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ধান চাল সংগ্রহের সময় কোন কৃষক বা মিলারের সঙ্গে অসদাচারণ করবেন না। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন না।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কথা তুলে ধরে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ আসায় প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেয়া হয়েছিল অতি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গরীব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে তালিকা প্রেরণ করার। এজন্য যেকোনো প্রকার হুমকি-ধামকিকে ভয় না করে। স্বজন প্রীতির ঊর্ধ্বে থেকে প্রকৃত গরিব ও দুঃস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করার। প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় অতীতে তালিকা তৈরি করার সময়ে যে ট্যাগ অফিসার ছিলেন তাদেরকে সরিয়ে নতুন করে কোনো ট্যাগ অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে হালনাগাদ করে নতুন তালিকা প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে বরিশাল বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা মোকাবেলা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারীভাবে ধান চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের প্রকিউরমেন্ট যেন কৃষক বান্ধব প্রকিউরমেন্ট হয়। চালের মান নিয়ে কোনো আপোষ নেই। কোন কৃষক যেন তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের নিকট বিক্রি না করেন।
ভিডিও কনফারেন্সে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসকগণ এবং বরিশাল বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ বক্তব্য রাখেন।
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ৩৩ কাচারী রোড, ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবি সমিতির ৪ ও ৫ নং ভবনের বিপরীত পাশে।
ঢাকা কার্যালয়ঃ কে ৭৪/৫,কোরাতলী এআই ইউবি রোড খিলক্ষেত, ঢাকা, ১২২৯।
যোগাযোগঃ 01917925375 /01736554862 / 01721927699
প্রকাশক: মারুফ হোসেন কমল