বিনোদন ডেস্ক :
অভিনয় শিল্পীসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট প্রায় সবার উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০১৯-২১) নির্বাচন। তবে এরমধ্যে ঘটেছে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও। যার রেশ ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সোহেল রানার মতো শীর্ষস্থানীয় শিল্পী-প্রযোজক-পরিচালক।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিএফডিসি’র (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন) শিল্পী সমিতির আর্টিস্ট স্টাডি কক্ষে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বেলা আড়াইটা নাগাদ দুই শতাধিক ভোট কাস্ট হয়েছে বলে জানা গেছে নির্বাচন কমিশন সূত্রে।
ভোটকেন্দ্রের পাশে অবস্থান করছেন প্রার্থীরা। তবে দুপুরের দিকে এফডিসি’র মূল ফটকে উত্তেজনা ছড়ায় ‘হলুদ পাস’ নিয়ে। নির্বাচনের দিন এফডিসিতে প্রবেশের জন্য শিল্পী-সাংবাদিকদের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে হলুদ রঙের বিশেষ পাস দেওয়া হয়। যে পাসটি ছিল না সোহেল রানা, পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকনসহ অনেকের কাছেই। যার অজুহাতে মূল ফটকে আটকে দেওয়া হয় তাদের।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সোহেল রানা
এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তারা। বিস্ময় প্রকাশ করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ মানুষ। উত্তাপ ছড়ায় এফডিসির ভেতর। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সিদ্ধান্ত হয়, ‘হলুদ পাস’ ছাড়াই এফডিসি কেন্দ্রিক যেকোনও সমিতির আইডি কার্ড দেখাতে পারলেই ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পাওয়া যাবে।
পরে সোহেল রানা এফডিসিতে ঢুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। বলেন, ‘এটা শিল্পীদের নির্বাচন হচ্ছে? এখানে এতো পুলিশ কেন? আমার চলচ্চিত্র জীবদ্দশায় এমন বাজে নির্বাচন কখনও দেখিনি।’
তিন নায়িকা-অরুণা, রোজিনা ও অঞ্জনা
অন্যদিকে সোহেল রানা-বদিউল আলম খোকনকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা আছে, বিশেষ পাস ছাড়া এফডিসিতে কেউ যেন ঢুকতে না পারে। আমরা কেবল আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।’
এদিকে নির্বাচনের পরিবেশ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এবারের সভাপতি প্রার্থী মৌসুমী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরিস্থিতি আর পরিবেশ কেমন, সেটা তো দেখতেই পারছেন। আপনি যা দেখছেন, আমিও তাই দেখছি। এর বেশি কিছু এখন বলতে চাই না।’ তবে মৌসুমী জানান, তারই আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেবেন বিকাল ৫টার পর, ভোটগ্রহণ শেষ হলে।
অপু বিশ্বাসকে ধরে আনছেন ওমর সানী, ডানে ইমন
এদিকে, এফডিসিজুড়ে নির্বাচনের মাঠ মাতিয়ে রাখছেন মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেল অনুসারীরা। অনেকেই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খানকে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তিনি সেটি গ্রহণ করছেন সানন্দে।
এবারের নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেল একটি। এটি দিয়েছেন সমিতির শেষ সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তারা দুজনে এবারও একই পদে লড়াই করছেন। অন্যদিকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যনির্বাহী সদস্য পদে কয়েকজন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন। এরমধ্যে সভাপতি পদে মিশা সওদাগরের বিপরীতে আছেন মৌসুমী। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের বিপরীতে আছেন ইলিয়াস কোবরা।
সহসভাপতির দুটি পদে আছেন ডিপজল, রুবেল ও নানা শাহ (স্বতন্ত্র)। সহসাধারণ সম্পাদক পদে আরমান ও সাংকোপাঞ্জা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে খালেদ আহমেদ ও মামনুন ইমন, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে লড়বেন জাকির হোসেন ও ডন।
এদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের ছাড়াই বিজয়ী হিসেবে এসেছে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সুব্রত, দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর এবং কোষাধ্যক্ষ পদে ফরহাদের নাম।
১১টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদের জন্য লড়বেন ১৪ জন অভিনয়শিল্পী। তারা হলেন−অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, আফজাল শরীফ, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন, জয় চৌধুরী, নাসরিন, বাপ্পারাজ, মারুফ আকিব, রঞ্জিতা ও শামীম খান (চিকন আলী)।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা শহিদুল হারুন ও বিএইচ নিশান। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন আলম খান, সদস্য হিসেবে রয়েছেন সোহানুর রহমান সোহান ও রশিদুল আমিন হলি।
এবার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোটার সংখ্যা ৪৪৯ জন।
ভোটকে কেন্দ্র করে বিএফডিসিতে আজ নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গণনা ও ফলাফল প্রকাশ হবে। নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে কেউ আপিল করতে চাইলে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে। এর জন্য আপিল ব