নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার দলের নেতা ও স্বজনরা তার অসুস্থতার যে চিত্র তুলে ধরেন, চিকিৎসকদের অবজারভেশন তেমন নয়। ওনার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা যতটা না উদ্বিগ্ন, তারা চেয়ে এ অসুস্থাকে নিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। এটা নিয়ে তাদের দুরভিসন্ধি রয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ফেনী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত-বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দু’বছর হয়ে গেছে তিনি কারাগারে, বিএনপি খালেদার জিয়ার মুক্তির জন্য চোখেপড়ার মতো কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। তারা আন্দোলন করে তাদের নেত্রীকে কারামুক্ত করতে পারলে করুক, আমার আপত্তি নেই। তারা শুধু হাঁকডাক দিতে পারে। আন্দোলন করতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার রায় প্রমাণ করে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার হস্তক্ষেপ করে না।
আওয়ামী লীগের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মামলার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে ছিলেন জানিয়ে কাদের বলেন, এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১৬ জনের সবার ফাঁসি হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক সভাপতিও ছিলেন, তাকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। সেও ফাঁসির রায় পেয়েছে। এ থেকে প্রমাণ হয় অপরাধী যেই হোক তার নিস্তার নেই।
চলমান শুদ্ধি অভিযান নিয়ে মন্ত্রী বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো দেশে দলীয় সরকার তাদের দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করেছে বলে আমার জানা নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা নিজের দলের লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিরল হয়ে রইবে। তিনি (শেখ হাসিনা) প্রমাণ করেছেন অপরাধ করলে নিজের দলেরও কোনো ছাড় নেই। শেখ হাসিনা সৎ সাহস দেখিয়েছেন।
টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যেই দুর্নীতি করুক, এটা সরকারের নজরে আছে, সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। দুদক আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্যের দুর্নীতি তদন্ত করছে, বলেন মন্ত্রী।
‘আদালত রায় দিয়েছে যে বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল, তাদের নেতা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে পারে না। বিএনপি নিজেদের দলের কোনো লোকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। আর বিএনপির আমলে দেশে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি’।
জয়নাল হাজারীর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হওয়ার আলোচনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সুনিদির্ষ্টভাবে কিছু বলতে পারছি না, সভাপতি নির্দেশ দিলে সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি যাওয়ার কথা। কিন্তু আমি কোনো চিঠি দেইনি।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের চলে যেতে হবে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, ক্রমাগত বাড়ছে। চীন, ভারত থেকে চাপ আসছে। সব দিক থেকে মিয়ানমার সরকার চাপে রয়েছে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরন্নবী, অতিরিক্ত জেলা প্রাশাসক (সার্বিক) সুমনী আক্তার, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, ফেনী পৌর সভার মেয়র হাজি আলাউদ্দিন, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সড়ক ও জনপদ বিভাগের কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান, নোয়াখালী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুর রহিম।