সেলিম মিয়াঃ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) তাঁর অধীনে কর্মরত পুলিশের সদস্য ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “জনগণের সাথে মিশতে হবে, কাজ করতে হবে, কোনো পুলিশ সদস্য ভাব নিয়ে চললে চাকরি করতে পারবেন না।”
(২৬ অক্টোবর, শনিবার) ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি বাদশা আপনি আমার প্রজা এই মনোভাব নিয়ে ডিএমপিতে কেউ (পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা) চাকরি করতে পারবেন না।”
কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
নাগরিকদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, যাঁরা আমাদের সাথে কাজ করতে চান তারা এক পা এগিয়ে আসুন আমরা সবাই মিলে আপনার দিকে দশ কদম এগিয়ে যাবো । পুলিশের সমস্ত ভালো কাজের সাথে থাকেন, ভালো উদ্যোগকে সমর্থন করেন এবং পুলিশের কোন বিচ্যুতি চোখে পড়লে আমাদের জানাবেন আমরা সংশোধনের চেষ্টা করবো এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। এই শহর ও দেশটা আমাদের। আমরা দায়িত্ববোধ ও মানুষের সেবা করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, “এই মহানগরের প্রতিটি মানুষের যে সম্মান, শ্রদ্ধা ও সুন্দর আচরণ পাওয়ার কথা সেই আচরণটি যদি কোন পর্যায় থেকে না পান তাহলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবেন।”
কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন উপলক্ষে আগতদের উদ্দেশ্যে সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) বলেন, মানুষকে যদি আমরা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে খেলাধুলায় অন্তর্ভূক্ত না করতে পারি, আমাদের সন্তানদের মাঠে নিতে না পারি, তাদের সুকুমার বৃত্তিগুলো গড়ে উঠার সুযোগ করে না দিই, তাহলে আমাদের সন্তানদের সঠিক পথে রাখতে পারবো না।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আপনি যদি নিজের নিরাপত্তা ও সন্তানের নিরাপত্তা চান এবং একটি বাসযোগ্য সমাজ তৈরি করতে চান, তাহলে আপনি এককভাবে কখনও করতে পারবেন না। পুলিশও এককভাবে কখনও করতে পারবে না। নিজের সন্তানের নিরাপত্তার জন্য ও সন্তান যাতে একটি সুন্দর সমাজ ও পরিবেশে বসবাস করতে পারে সেটির জন্য পুলিশের সাথে মিলে কাজ করুন। সমাজের যে বিষয়গুলো আমরা ঘৃণা করি, সমাজের সবাই মিলে আসুন তাদের বিরুদ্ধে সচেষ্ট হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের করাল গ্রাস থেকে সন্তানকে নিরাপদ রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমার সন্তান আপনার সন্তান কেউই মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ সমাজের নানাবিধ অপরাধজনক কাজের প্রভাব থেকে এককভাবে মুক্ত থাকতে পারবে না। যদি না আমরা সবাই মিলে এমন একটি সমাজ তৈরি করি যেখানে তার মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (এ এন্ড ও) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী বিপিএম (বার) বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং একটি গ্লোবাল কনসেপ্ট। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম রয়েছে। তাবে বাংলাদেশের কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমটা একটু ভিন্ন। জনগণ ও পুলিশের একাত্মতায় সোনার বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ২ লক্ষ ১২ হাজার সদস্য কর্মরত রয়েছে। জাতিসংঘের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী একটি দেশের ৪০০ জন জনগণের সেবাই একজন পুলিশ। সেখানে আমাদের দেশে প্রতি ৮০০ জনের সেবায় একজন পুলিশ কাজ করছে। এজন্য পুলিশি সেবায় জনগণের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরে কমিউনিটি পুলিশিংয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখায় কমিউনিটি পুলিশের সাথে যুক্ত আটজন সাধারণ নাগরিক এবং ১৬ জন পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর থেকে একটি শোভাযাত্রাও বের করে ডিএমপি।
ছবি, সংগৃহীত