ময়মনসিংহ অফিসঃ

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার পাড়াটুঙ্গী মসজিদের পাশে ৬ বছরের অজ্ঞাত শিশু সূচী হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত ঘাতক মা চম্পা বেগম ওরফে রুমাকে গ্রেফতার করে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ। চম্পা হত্যার দায় স্বিকার করে আদালতে জবানবন্ধি দিয়েছে। তার বাড়ি জামালপুরের আড়ালিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত ইব্রাহিম। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে সোমবার এক মার্চ ডিবি পুলিশ চম্পাকে গ্রেফতার করে।
ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, গত ফেব্র“য়ারী রাত নয়টারদিকে মুক্তাগাছা পাড়াটুঙ্গী রহিমা জান্নাতুল জামে মসজিদের পাশে ৬ বছরের অজ্ঞাত শিশুর লাশ উদ্ধার করে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ। পরদিন লাশের পরিচয় সনাক্ত হলে নিহতের পিতা জামালপুরের চিথলিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম মুক্তাগাছা থানায় মামলা নং-২০, তারিখ-২৭/০২/২০২১ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দায়ের করে।
মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারে মামলাটি ডিবি পুলিশের উপর ন্যান্ত করেন। পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ নিজের তত্বাবধানে এসআই পরিমল চন্দ্র সরকারকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র সরকার টানা অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহত সূচীর মা চম্পাকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে এক মার্চ ভোরে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত চম্পার বরাত দিয়ে ডিবির ওসি জানান, মা চম্মা ৩ বছর আগেই স্বামী সাইফুলকে রেখে বগুড়া চলে যান এবং বগুড়া সদর থানাধীন ঘুন্ডিমোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করত। নিহত সূচী তার বাবা সাইফুলের নিকট লালিত পালিত হয়। একমাস আগে সূচীর মা চম্পা বগুড়া থেকে জামালপুর এসে কাউকে না বলে তার দাদির কাছ থেকে সূচীকে নিয়ে বগুড়া চলে যায়। সূচী বগুড়া তার মায়ের কাছে থাকতে চায় নি। এজন্য মা চম্পা তার মেয়ে সুচীকে প্রায়ই মারধর করত। ঘটনার ৪/৫ দিন আগে সূচীকে মাথায় আঘাত করে মা চম্পা। সুচী গুরুতর অসুস্থ্ হয়ে পড়লে মা চম্পা তাকে বগুড়া হাসপাতালে ভর্তি করলে একদিন দিনপর মারা যায়। সুচতুর মা চম্পা পরের দিন শিশু কন্যা সুচীর লাশ বাস যোগে ময়মনসিংহের মুক্তগাছায় এনে মসজিদের কাছে ফেলে পালিয়ে যায়।
ওসি শাহ কামাল আকন্দ আরো জানান, মায়ের কাছে থাকতে না চাওয়া এবং বাবার কাছে থাকতে চাওয়াই শিশুটির জন্য কাল হয়েছে। গ্রেফতারকৃত চম্পা বেগম ওরফে রুমাকে মঙ্গলবার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হাফিজ আল আসআদ ২নং আমলী আদালতে পাঠানো হলে, হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। তিনি আরো বলেন, চম্পা ওরফে রুমার জবানবন্দি পর্যালোচনাসহ হত্যাকান্ডে আরো কেউ জড়িত কিনা তা তদন্ত চলছে। এছাড়া এই শিশুর লাশটি ময়মনসিংহ পর্যন্ত আনতে আরো যারা সহযোগীতা করছে তা তদন্তে দেখা হচ্ছে।