১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ জাতীয়, ঢাকা জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রবেশকালে মন্ত্রী-এমপি আগত অতিথিদের গাড়ি তল্লাশি
১৭, মার্চ, ২০২১, ৭:২৭ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকাল থেকে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আশপাশ সড়কে পুলিশসহ নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন। ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমপি-মন্ত্রীসহ আগত অতিথিদের গাড়ি তল্লাশি করে গেট দিয়ে প্রবেশ করতেও দেখা গেছে।

বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের সামনে অনুষ্ঠানে আগত এমপি-মন্ত্রীসহ অতিথিদের গাড়ি তল্লশি করে ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।

সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ), পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র্যাব, ডিএমপির ট্রাফিক, এপিবিএনসহ পুলিশের কয়েকটি ইউনিট জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে দায়িত্ব পালন করছে।

রাজধানীর আগারগাঁও থেকে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারমুখী, কলেজগেট, আসাদগেট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সড়কে যানচলাচল সীমিত করা হয়েছে। সন্দেহজনক গাড়িগুলো তল্লাশিও করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের সড়কগুলোতে গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা না গেলেও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে সীমিত আকারে।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের আশেপাশে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখানে পুলিশের কয়েকটি ইউনিটসহ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও এসএসএফ কাজ করছে।

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার পাঁচজন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের বাংলাদেশ সফরকালে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অফিসার ও ফোর্সদের নির্দেশ দেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

আইজিপি বলেন, ‘বিদেশি মেহমানদের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটে এ ধরনের কোনো কার্যক্রম পুলিশ বরদাশত করবে না।’

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগামীকাল থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা ঢাকায় আসবেন। তারা আমাদের সম্মানিত অতিথি। এত গুরুত্বপূর্ণ মেহমান ইতোপূর্বে একসঙ্গে ঢাকায় আসতে আমরা দেখিনি। দেশ ও জাতির জন্য এ ধরনের সফর অত্যন্ত সম্মান ও গর্বের। বিদেশি অতি গুরুত্বপূর্ণ মেহমানদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ভেন্যু নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে।’

আগামী ১০ দিন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনগণের চলাচল সীমিত রাখার জন্য তিনি নগরবাসীর প্রতি আবারও অনুরোধ জানান। এ সময় রাজধানীতে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ মিছিল, মিটিং ইত্যাদি আয়োজন না করার জন্যও সকলের প্রতি অনুরোধ জানান আইজিপি।

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে র‍্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেউ যদি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাঘাত ঘটাতে চায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে র্যাব তিন স্তরের (জল, স্থল ও আকাশ) বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব সদর দফতর থেকে মনিটরিং করা হবে। অনুষ্ঠানে কেউ যদি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাঘাত ঘটাতে চায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

র‍্যাব ডিজি বলেন, ‘সার্বিকভাবে সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে সার্বক্ষণিক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে সারাদেশে র্যাব নিরাপত্তা জোরদার করেছে। অনুষ্ঠান চলাকালীন ও অনুষ্ঠান শেষেও র্যাবের নিরাপত্তা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, র‍্যাবের স্ব স্ব ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো তথ্য পেলে র্যাবের কন্ট্রোল রুম ও অনলাইনের মাধ্যমেও র্যাবের সঙ্গে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারবেন। সাদা পোশাক ও র‍্যাবের পোশাকেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ভিভিআইপিদের নিরাপত্তায় র‍্যাব সদর দফতর থেকে পাঁচজন অফিসার সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।’

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, ‘যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের ডগ স্কোয়াড, পর্যাপ্ত রিজার্ভ ফোর্স, স্পেশাল টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে। সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিও করা হবে। চেকপোস্টে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের শনাক্তকরণে র্যাবের নজরদারি থাকবে। এয়ারফোর্সের এয়ার উইং ও হেলিকপ্টার যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‍্যাবের নজরদারিতে থাকবে। বিদেশি অতিথিদের সার্বক্ষণিক প্রটেকশন টহল প্রস্তুত থাকবে।