মারুফ হোসেন কমলঃ
অদ্য ৩০/১০/১৯ খ্রিঃ তারিখ জেলা পুলিশ, ময়মনসিংহের পুলিশ লাইন্সের হল রুমে “ট্রলি ব্যাগে পাওয়া লাশের মামলার রহস্য উদঘাটন” বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মোঃ শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম (বার),পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত)।
গত ২০/১০/২০১৯ তারিখ কোতোয়ালী থানাধীন পাটগুদাম ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে একটি ট্রলি ব্যাগ মালিকবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকার সংবাদ পেয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে অবস্থান করে। দীর্ঘ সময়েও উক্ত ব্যাগের মালিক না পাওয়ায় ব্যাগে বিস্ফোরক দ্রব্য আছে সন্দেহে ডিআইজি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ,এসপি সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।ঢাকা বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সহায়তায় ২১/১০/২০১৯ তারিখ সকাল ০৮.০০ ঘটিকায় উক্ত ট্রালি ব্যাগ খুলে হাত, পা ও মাথাবিহীন একটি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ সুপার কুড়িগ্রামের মাধ্যমে জানা যায় যে, একই তারিখ কুড়িগ্রাম সদর থানা এলাকায় একটি কাটা পা উদ্ধার হয়েছে এবং ২২/১০/২০১৯ তারিখ কুড়িগ্রামে রাজারহাট থানা এলাকায় একটি ব্যাগে কাটা পা, দুইটি হাত ও ভ্যানেটি ব্যাগে মাথা পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনা সংক্রান্তে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং-১০২, তারিখ-২৫/১০/২০১৯ ইং ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করতঃ তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখা,ময়মনসিংহে ন্যস্ত করা হয়। মামলাটি তদন্তকালে কুড়িগ্রামে অপর ব্যাগে প্রাপ্ত চিরকুটের সূত্র ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ২৮/১০/২০১৯ তারিখ গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থেকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ০৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশ পায় এবং এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়। গ্রেফতারকৃত ০৪ জন আসামীই হত্যার দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানাধীন বানিয়ারচালা সাকিনে আসামীদের ভাড়া বাসায় হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। উক্ত ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় ০৫ জন সাক্ষী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
ভিকটিমের নাম ঠিকানা- মোঃ বকুল (২৮), পিতা-ময়েজ উদ্দিন, সাং-হুগলা, থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ও ঠিকানা-
১। মোঃ ফারুক মিয়া (২৫),
২। মোঃ হৃদয় মিয়া (২০),
৩। মোছাঃ সাবিনা আক্তার (১৮), পিতা-মোঃ বাবুল মিয়া, মাতা-মোছাঃ পারুল বেগম, সাং-হুগলা (বাজারের সাথে), থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা
৪। মোছাঃ মৌসুমী আক্তার (২২), স্বামী- মোঃ ফারুক মিয়া, পিতা-মোজাফর আলী, মাতা-মোছাঃ রহিমা বেগম, সাং-কৃষ্ণপুর মিয়াপাড়া, থানা- কুড়িগ্রাম,, জেলা- কুড়িগ্রাম,, স্বামী- মোঃ ফারুক মিয়া, সর্ব বর্তমান সাং-বাঘেরবাজার বানিয়ারচালা (জনৈক মোঃ লিটন ঢালী এর বাসার ভাড়াটিয়া), থানা-জয়দেবপুর, জেলা-গাজীপুর।
উদ্ধারকৃত আলামত
১। একটি ছুরি ( হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ও আসামীর দেখানো মতে গ্রাম সূতারপাড়, থানা-পূর্বধলা, নেত্রকোনা হতে উদ্ধারকৃত)।
২। মোবাইল ফোন।
৩। একটি ব্যাগ। (যাতে করে লাশের হাত, পা বহন করে কুড়িগ্রামে ফেলে আসা হয় যাহা গাজীপুর জেলা জয়দেবপুর থানাধীন বালিচালা গ্রাম হতে উদ্ধার হয়)।
৪। একটি ইটের অংশ (হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হয়)।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোঃ শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম(বার)
অদ্য পুলিশ লাইন ময়মনসিংহে সংবাদ সম্মলেনে ঘটনার পূর্বাপর বর্ণনা দেন।দ্রুততম সময়ে এই চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন করায় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ তথা গোয়েন্দা পুলিশের ভাবমূর্তি অারও উজ্জ্বল হয়েছে। তথ্যপ্রতিদিন