৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ অপরাধ দেশব্যাপী দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের ৩ টি অভিযান ।
৩১, অক্টোবর, ২০১৯, ৭:৫২ অপরাহ্ণ -

সেলিম মিয়াঃ

অভিযান-০১:
রাজউক এর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নকশা ও বিল্ডিং নির্মাণের নিয়মনীতি ছাড়াই রাজধানীর নারিন্দায় আধা কাঠা জমিতে ৭ তলা বিল্ডিং নির্মাণ হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ (৩১.১০.২০১৯ খ্রি.) দুদক, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বায়েজেদুর রহমান খান ও উপ-সহকারী পরিচালক মোছাঃ ফাহমিদা আক্তার এর সমন্বয়ে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। রাজউকের অথরাইজড অফিসার, পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পরিচালিত অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযানকালে দুদক টিম সংশ্লিষ্ট রেকর্ড পত্র পর্যালোচনা এবং সরেজমিনে দেখা যায় , পাশাপাশি তিনটি ভবন-ই ইমারত নির্মাণের সকল প্রকার নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ০৭ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করছে। অবৈধভাবে রাজউকের নকশাবহির্ভূত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন উচ্ছেদ করার জন্য রাজউক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়ার সুপারিশ করে টিম কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

অভিযান-০২:
চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন লক্ষিপুর মডেল ইউনিয়ন এর বায়রা বাজারের নিকটে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের ০১ তলা ১০০ টি ভবন নির্মাণে প্রতিটি ঘর প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার ঘুষ বানিজ্য এবং নিম্নমানের কাজ করে সরকারের কোটি কোটি টাক অত্মসাৎ করা হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুমিল্লার সহকারী পরিচালক রাফি মোঃ নাজমুস সাদাৎ এর নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালিত হয়। দুদক টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের সত্যতা পায়। সংশিশ্লষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা দেখা যায়, উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে চেয়ারম্যান মো: সেলিম খান নিজেই বেআইনিভাবে প্রকল্প এলাকার সন্নিকটে নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে লক্ষ লক্ষ টন মাটি বালু উত্তোলন করায় প্রকল্প এলাকা নদী ধ্বংসে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ১৫টি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় জনসাধারণকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি ঘর বরাদ্দ অবৈধভাবে ঘুষ লেনদেন হয়েছে এবং ঘরগুলো যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে নির্মাণ করা হয়নি। এ বিষয়ে দুদক টিম সদর উপজেলা প্রশাসন কে ড্রেজারের মাধ্যমে নদী খনন করে মাটি ও বালি বালু উত্তোলন মোবাইল টিম পরিচালনা করে বন্ধ করার অনুরোধ করেন। দুদক টিম প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে।

অভিযান-০৩:
রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট ফরম গ্রহণ, ফরম পূরণে ছোটখাটো ভুলত্রুটির দোহাই দিয়ে প্রত্যেক সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ এবং পাসপোর্ট প্রদানের চরমভাবে হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ কেন্দ্র-১০৬ এ আগত অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহীর সহকারী পরিচালক জনাব নাজমুল হোসাইন এর সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম আজ রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিতি দুদক টিম দেখতে পায় বহু সংখ্যক দালাল ও বহিরাগতরা পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশে ঘুরাঘুরি করে। সেবো প্রত্যাশীরা আসার সাথে সাথেই তাদের লোভ দেখিয়ে বিভ্রান্ত করে, পাসপোর্ট করিয়ে দেয়ার নামে প্রতিদিন টাকা আদায় করছে। এতে সাধারণ মানুষ প্রকৃত সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং চরমভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। দুদক টিমের উপস্থিতিতে দালারা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে রাজশাহী পাসপোর্ট এর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে গ্রহক সেবা নিশ্চিত করার
তাদিগ দয়ে দুদক টিম।

এছাড়া, স্কুলের মালামাল না কিনে স্টক রেজিস্ট্রারে ভুয়া তালিকা জমা দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে মাগুরা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাগুরাতে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়।

দুদক অভিযোগ কেন্দ্র-১০৬ এ আগত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে প্রতিবেদন আকারে অবহিত করার জন্য সদর উপজেলা-নাটোর, মতলব দক্ষিণ-চাঁদপুর, সদর উপজেলা- ঝিনাইদহ, তালা-সাতক্ষীরা, উল্লাপাড়া-সিরাজগঞ্জ, চকরিয়া-কক্সবাজার, শ্যামনগর-সাতক্ষীরা-কে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।