শেখ রাজীব হাসান,টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের টঙ্গীর পশ্চিম থানাধীন উত্তর আউচপাড়ায় স্ত্রী জায়েদা বেগম মুনা (২৯)কে প্রবাসে পাঠিয়ে তার উপার্জিত টাকা আত্যসাৎ করে তিন বছরের শিশু কন্যা ফারিয়া আলম মুনাকে ফেলে পুনর্বিবাহের ঘটনায় স্বামী মোঃ ফিরোজ আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জায়েদা বেগম মুনা জানায়, গত ০৬-১১-২০১৭ইং তারিখে স্বামীর অনুমতি নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে আমি দেশের বাহিরে যাই। বাহিরে যাওয়ার পর জানতে পারি আমার স্বামী মোঃ ফিরোজ আলম গত ০২-১০-২০১৮ইং তারিখে আমার অনুমতি ছাড়াই পপি নামের একজন মেয়েকে বিয়ে করে। আমি গত ২০-০৬-২০১৯ইং তারিখে দেশে ফিরে আসলে আমার স্বামী ও পপির মধ্যে ভিষণ ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়। এ সময় খাপাড়া ড্রেন রোড এলাকার মোঃ মনির হোসেন (৪৫) ওরফে বাবুর্চি মনির আপস মিমাংসার কথা বললে আমি ও আমার স্বামী আপত্তি জানাই। পরবর্তীতে মনির হোসেন পপি বেগমের পক্ষ নিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয় ও আমার স্বামীকে পপি বেগমের কাছে চলে যেতে বাধ্য করে। এবং আমাকে বলে পপি বেগমের কাবিনের টাকা দিতে পারলে তোমার স্বামীকে ফেরত পাবে। আমি আমার স্বামীকে আনার জন্য চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে গত ০৮-০৭-২০১৯ইং তারিখে টঙ্গী পশ্চিম থানায় আমার স্বামীর নামে একটি অভিযোগ করি। অভিযোগের পরিপেক্ষিতে এস আই নেওয়াজ আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা বিবেচনা করে আমার স্বামীকে ডেকে এনে আমার সাথে মীমাংসা করে দেয়। পরবর্তীতে মনির হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামীর কাছে আমার ব্যাপারে অশ্লীল কথা বার্তা বলে। মনির আমার স্বামীকে হুমকি দিয়ে তার কাছে চাঁদা দাবী করলে আমার স্বামী ১০,০০০(দশ হাজার টাকা) ও ওয়ান ব্যাংকের চেকের ১টি পাতা নিয়ে বাবুর্চি মনিরের বাড়ীতে গিয়ে দেখা করে। তারপর থেকেই আমার স্বামী নিখোঁজ রয়েছে। আমার স্বামী নিখোঁজ হওয়াতে আমি পপির বাড়ীর ঠিকানা জানার চেষ্টা করলে জানতে পারি তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৮ ও ৫০ নং ওয়ার্ডের মুসলিম নিকাহ ও তালাক রেজিস্টার মাওলানা মুহাম্মদ নাসির উদ্দিনের কাজী অফিসে গিয়ে বিবাহ করে। এসময় জানা যায়, খরতৈল, গাজীপুরা ও সাতাইশ এলাকার মোঃ মামুন হোসেন, মোসাঃ শিল্পী আক্তার ও মরিয়ম বেগম এ বিবাহে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলো যেখানে পপি বেগম তার পূর্বের স্বামী ও ৮ বছরের সন্তানকে নিয়ে সাক্ষী মরিয়মের বাসায় দীর্ঘদিন ভাড়া থাকতো। ১০-০২-২০১৮ইং তারিখের রেজিস্টারকৃত (বালাম নং-১/১৮, বই নং- এ=১৬৫০, পৃষ্ঠা নং-১২) কাবিনের কাগজে পপি বেগমকে কুমারী দেখানো হয়েছিলো যার জন্ম সাল ছিলো ০১-০১-১৯৯৩ইং। এ সময় পপি বেগমের জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে জানতে পারি পপির পুরো নাম পপি খানম, পূর্বের স্বামীর নাম ফারুক হাওলাদার, মাতার নাম-আরজুবান বেগন ও জন্ম তারিখ- ১৬ই অক্টোবর ১৯৯০ইং যা কিনা নিকাহ রেজিস্টারের সঙ্গে কোন মিল নেই। তবে কাজী কোন পন্থায় এ নিকাহ সম্পন্ন করেছেন আমি এর সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।
জায়েদা বেগম মুনা আরো বলেন, আমার স্বামী ফিরোজ আলম নিখোঁজ হওয়ায় গত ২৮-১০-২০১৯ইং তারিখে আমি বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেড আদালত নং-১ গাজীপুর এ নিজ বাদী হয়ে ১। মোঃ ফিরোজ (৩৬) পিতাঃ মৃত আলী আহম্মদ ও ২। মোঃ ওসমান (২২), পিতাঃ মোঃ শহীদ, এর বিরুদ্ধে একটি সি, আর মামলা করি যার মামলা নং- ৫১৯/১৯। যারা উভয়ে গ্রামঃ চরমারটিন, পোঃ আলেকজান্দ্রা-৩৭৩০, থানাঃ কমলনগর, জেলাঃ লক্ষীপুর, বর্তমান- গাজীপুরা সাতাইশ রোড, ব্যাংক কোলনী (আলেয়া বেগমের বাড়ীর ভাড়াটিয়া) থানাঃ টঙ্গী পশ্চিম গাজীপুর মহানগরের বাসিন্দা। এবিষয়ে দীর্ঘদিন যাবত টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি ওয়ারেন্ট হলেও আসামীদের ধরা হচ্ছে না। মামলা করার পর থেকে ১। মোঃ মনির হোসেন (৪৫), পিতাঃ অজ্ঞাত, ২। মোসাঃ মরিয়ম(৫০), সবামীঃ নজরুল, ৩। মোসাঃ শিল্পী বেগম (২২), পিতাঃ এস্তেম ব্যাপারী, ৪) মোঃ মামুন(৩০) পিতা খলিলুর রহমান, (সর্ব সাং- ড্রেন রোড, থানাঃ টঙ্গী পশ্চিম, গাজীপুর মহানগর) আমাকে প্রাননাশের হুমকি দেয় এবং আমি পুনরায় সঠিক বিচারের জন্য ১-১১-২০১৯ইং তারিখ রাতে পুনরায় টঙ্গী পশ্চিম থানায় হাজির হয়ে উক্ত চার ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করি ও গনমাধ্যম কর্মীদের শরণাপন্ন হই। এ অবস্থায় দ্রুত অভিযোগ কৃত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা না নিলে আমাদের প্রাণনাশের ঘটনা ঘটতে পারে।
তিন বছরের শিশু ফারিয়া আলম মুনিয়া সাংবাদিকদের সম্মুক্ষে বলে, এমন বাবা আমি চাই না, ওইটা তো একটা পচা বাবা, আমার বাবা লাগবে না, আমার আব্বু নাই।