১৯শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ অপরাধ, ঢাকা মুফতি – হাফেজ পরিচয়ে প্রতারণা সিআইডি কর্তৃক ৫ জন গ্রেফতার
৯, মার্চ, ২০২২, ৭:১৮ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

চীফ রিপোর্টারঃ

ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে এমন প্রতারণাকারী চক্রের মূল হোতা সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি সুত্র জানা গেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে নিজেদেরকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে নামের সাথে মুফতী ও হাফেজ টাইটেল ব্যবহার করে আসছিলেন। তারা বিভিন্ন শ্রেনির সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের নিকট ফোন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গল্প সাজিয়ে প্রতারনা করে আসছিল।

যেমন তারা কখনো মসজিদের মোয়াজ্জেম বা তার স্ত্রী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন, হাসপাতালের বড় অংকের চিকিৎসা খরচ প্রদান করতে না পারায় লাশ বের করে দাফন-কাফন করতে পারছেন না জানিয়ে সাহায্য সহযোগিতা চায়।

এরা টার্গেটকৃত ব্যক্তির নাম ঠিকানা ও পদবী জেনে নিকটস্থ বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে ফোন দিয়ে থাকে। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০/২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ এ বিষয়ে সিআইডিতে অবহিত করলে অনুসন্ধান করে সংঘবদ্ধ চক্রটিকে সনাক্ত করে সিআইডি। এরপর চক্রের মূল হোতা মো. আব্দুল মান্নান শেখসহ চক্রের ৫ জনকে মিরপুর পল্লবী থানা ও তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের নিকট থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও এসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নাম্বার সম্বলিত ডাইরেক্টরী বহি উদ্ধার করা হয়।

তারমধ্যে ঢাকা গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগাং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল, ঢাকা ইউনিভারসিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের ডাইরেক্টরী বহিসহ সবমিলিয়ে ৩৫টি ডাইরেক্টরী বহি উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি জানান, প্রতারণার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তারা হলেন- আব্দুল মান্নান শেখ (৪২) মো. কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান(৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব(২৬), মো. আমিনুর রহমান (৩৯) ও মো. শওকত আলী খান সাগর (৪৩)।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, আসামীদের নিকট থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইলের বিকাশ নম্বরের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিমাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা এভাবে হাতিয়ে নিত।

ডাইরেক্টরী বইতে কে টাকা দিয়েছে, কে কখন দিবে, কে কেমন ব্যবহার করেছে ইত্যাদি কমেন্ট লিখে রাখা হতো। করোনাকলীন সময়ে অর্থাৎ দুই বছরের অধিক সময় ধরে তারা এই প্রতারনা করে আসছিল বলে জানা যায়।