১৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ অপরাধ, ময়মনসিংহ প্রেমিকার পরিবারের দেয়া আগুনে পুড়ল প্রেমিক সিরাজের মা ॥ পিবিআইয়ের অভিযানে বাবা-মা গ্রেফতার
৬, জুলাই, ২০২২, ১১:০৯ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি: , ,

এম এ আজিজ, স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ

প্রেমের টানে ১৯ জুন ঘর ছাড়েন ময়মনসিংহ সদরের চর ঈশ্বরদিয়া পূর্বপাড়ার মোঃ আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা একই গ্রামের খোকন মিয়া ওরফে কাজলের মেয়ে খুকি আক্তার।
খুকি আক্তারকে ফিরে পেতে বাবা খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও মা নাসিমা আক্তার কনা প্রেমিক সিরাজুল ইসলামের পিতা আব্দুর রশিদ ও মা লাইলী বেগমকে চাপ দিতে থাকে। মেয়েকে ফেরত না দিয়ে তাদের দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। ১০ দিন অতিবাহিত হলেও মেয়ে খুকি আক্তারকে ফিরে না পেয়ে বাবা খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও মা নাসিমা আক্তার কনা কতক লোকজন নিয়ে গত ২৮ জুন সকালে প্রেমিকের পিতা আব্দুর রশিদের বাড়ীতে গিয়ে তাদেরকে গালিগালাজ করতে থাকে। আব্দুর রশিদ বাড়িতে না থাকায় তারা প্রেমিক সিরাজুলের স্ত্রী লাইলী আক্তারের মুখ চেপে ধরে হাত, পা বিদ্যুতের কালো তার দিয়ে বেধে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যায়। লাইলী আক্তারকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। লাইলী আক্তারকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্রাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এ ভর্তি করা হলে সেখানে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় লাইলী আক্তারের স্বামী আব্দুর রশীদ বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৯৯, তাং-২৮/০৬/২২ খ্রিঃ, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৪(১) দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর ও নৃশংসভাবে পুড়ে এই হত্যাকান্ডের ঘটনাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পিবিআই ময়মনসিংহ ছায়া তদন্ত শুরু করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবুল কাশেম পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের সহযোগীতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি টিমের সহযোগীতায় মঙ্গলবার নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকা হতে নৃশংস এই আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার আত্মগোপনে থাকা মূলহোতা খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও নাসিমা আক্তার কনাকে গ্রেফতার করে।
এর আগে থানা পুলিশ হত্যাকান্ডের সহযোগী আসামী জাহাঙ্গীর ও আছমাকে গ্রেফতার করলেও মামলার মূল এজাহারনামীয়রা পালিয়ে আতœগোপনে চলে যায়। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস গ্রেফতারকৃতদেও বরাত দিয়ে বলেন, আসামী খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও নাসিমা আক্তার কনা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তাদেরকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।