২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ অর্থনীতি, ঢাকা, সারা বাংলা সরকারিভাবে কেনা হচ্ছে সাড়ে ১০ লাখ টন চাল-গম – খাদ্যমন্ত্রী
৬, সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৫২ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

চীফ রিপোর্টারঃ

– সরকারিভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ ৩০ হাজার টন চাল ও গম কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বোরো সংগ্রহ অভিযান ও চলমান খাদ্যবান্ধব এবং ওএমএস কর্মসূচিসহ সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

বোরো মৌসুমে ১১ লাখ ২১ হাজার ৯১০ টন সিদ্ধ চাল এবং ৫৫ হাজার ২০৮ টন আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যতটুকু বেশি পারি আমরা চাল কিনেছি।’

তবে ধান কেনায় সরকার লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৬ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও কেনা হয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৪৮ টন। ধানটা রাখা হয় এজন্য যে, বাজারে যদি ধানের দাম কমে যায়, কৃষকরা যেন বিপদে না পড়ে। সরকার যদি ধানের বাজারে থাকে, তাহলে সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনতে পারবে না। তবে আমাদের রেটের চেয়েও কৃষকরা বাজারে বেশি দাম পেয়েছে। এজন্য ধানটা আমরা শতভাগ কিনতে পারিনি।’

সরকার চলতি আমন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে তবেই চাল আমদানি করবে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারিভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ ৩০ হাজার টন চাল ও গম কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল, মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন চাল এবং ভারত থেকে এক লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। এছাড়া রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম কেনা হবে।

ভিয়েতনাম, ভারত ও রাশিয়া থেকে চাল আমদানিতে ইতোমধ্যে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন এবং চুক্তিও সেরে নেওয়া হয়েছে জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজ-কালের মধ্যে হয়তো এলসিও হয়ে যাবে। তবে মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন চাল আনার প্রস্তাব বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে যাচ্ছে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি টন সিদ্ধ চাল ৫২১ ডলার ও আতপ চাল ৪৯৪ ডলার করে পড়বে। প্রতি টন চাল ভারত থেকে ৪৪৩ দশমিক ৫ ডলার ব্যয়ে আনা হবে।

সরকার ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ডের চাল বেশি দামে কিনছে কেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা থাইল্যান্ডের কাছে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। তারা সেভাবে সাড়া দেয়নি। আগে চুক্তির পরও চাল নেওয়া হয়নি বলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে মতবিরোধ আছে। আমরা থাইল্যান্ড থেকে চাল নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মানের কারণে ভিয়েতনামের চালের দাম একটু বেশিই থাকে। দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে যেখান থেকে পারবো চাল আনতে হবে। টাকা দিকে তাকিয়ে তো লাভ নেই।’

আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেসরকারিভাবে চাল আমদানির জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলাম। সেখানে ২৫ শতাংশ শুল্ক থাকার কারণে ৪৭ হাজার টনের মত চাল এসেছে। শুল্ক আরও ১০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি। আমরা আশা করি কিছু চাল আরও আসবে। মোটা চাল নয়, নন-বাসমতি মধ্যম মানের সরু চাল আসবে বলে আমরা বিশ্বাস।’

গত কয়েকদিন ধরে চালের দাম কিছুটা নিম্নমুখী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন বাজার দর নিম্নমুখী, চালের দাম কমেছে। মিলগেট থেকে শুরু করে পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।’

পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে সরকারিভাবে আরও চাল কেনা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কারণ এবার প্রকৃতির অবস্থা খারাপ। আমনের ফলন কম হতে পারে।’

মন্ত্রী জানান, সরকারিভাবে ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল, মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন চাল ও ভারত থেকে ১ লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। এছাড়া রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম কেনা হবে। ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করার কারণে দেশের বাজারে এখন চালের দাম নিম্নমুখী বলেও দাবি করেন তিনি।

দেশে খাদ্যের ঘাটতির কোনও আশঙ্কা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত যা মজুদ রয়েছে তাতে খাদ্য ঘাটতির কোনও আশঙ্কা নেই। তারপরেও অতিরিক্ত মজুদের জন্য কয়েকটি দেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।