নিলয় হাসান সুজনঃ
বলছি ময়মনসিংহ জেলাধীন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার, উপজেলা শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া কাঁচামাটিয়া নদীর কথা। মানবসভ্যতার অনন্য বাহন হচ্ছে নদী।
সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়েছে নদী, জলপান থেকে যোগাযোগ নদীকেন্দ্রিক। নদীর মাধ্যমে জীবিকা অর্জন করে মানুষ গড়ে তুলেছে শহর ও ব্যবসাকেন্দ্র।কাঁচামাটিয়া নদীর উৎস ব্রহ্মপুত্র নদের স্রোতধারায়। অনেক মানুষ এই নদীর ওপর নির্ভরশীল ছিলেন তারা আজ সেই পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। কালের আবর্তে ও সংস্কারের অভাবে পলি পড়ে নদীটি ভরাট হয়ে গেছে। সঙ্গত কারণেই নদীর লালন ও রক্ষণ সব দেশেই রাষ্ট্রীয়ভাবে সমাদৃত। ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। পাঁচ দশক আগের হাজার নদীর দেশের তকমা হারিয়ে এখন বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা দুইশতে ঠেকেছে।
এক সময় কাঁচামাটিয়া নদীর জৌলুস ছিল,ছিল নদীপথে মানুষের যাতায়াত দূর-দূরান্তের অনেক বণিকরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতেন এই এলাকায়। কাঁচামাটিয়া নদীকে কেন্দ্র করে গরে উঠেছে অসংখ্য জনপদ, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এগারো টি ইউনিয়নের মধ্যে, চারটি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কাঁচামাটিয়া নদী বিশেষ করে মধুপুর, রাজিবপুর, উচাখিলা, বড়হিত,এলাকার লোকজন ইন্জিন চালিত নৌওযান দিয়ে ময়মনসিংহ জেলা শহরে চলাফেরা করতো,তথ্য সংগ্রহে কথা হয় এই এলাকার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ লোকদের সাথে এই এলাকার জৈষ্ঠ ব্যক্তি মোহাম্মদ হুরমত আলীর বলেন আগে এই নদী দিয়া বড় বড় লঞ্চ স্টিমার চলত সেলো মেশিন চালিত নৌকায় আমরা শহরে যাইতাম মাল কিনতে, আমার কাপড়ের ব্যবসা ছিল এখন নদী নাই নদী শুকিয়ে গেছে ব্যবসাও নাই আমার, এখন ময়মনসিংহে গেলে গাড়ি-ঘোড়া দিয়া যাওন লাগে। জামে পড়ে থাকন লাগে অনেকক্ষণ, এমনকি গাড়িতে বইসা থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা নদীপথেই বালা ছিল যানজট ছিল না । কথা হয় সুনীল বর্মন এর সাথে তিনি পেশায় জেলে তিনি বলেন এ নদী থেকে মাছ ধরে সংসার চালাইছি এখন নদীও নাই মাছও নাই কি করবা বউ পোলাপান নিয়ে খুব কষ্টে আছি। পরিশেষে বলা যায়
নদী রক্ষার দায়িত্ব কোনো বিশেষ সংস্থা বা গোষ্ঠীর নয়। এটা টিকিয়ে রাখা জাতীয় আন্দোলন। এই আন্দোলনে শরিক হতে হবে সবাইকে আন্তরিকতা দিয়ে। সব আন্তরিকতায় সঞ্জীবনী দিতে পারে রাজনৈতিক পদক্ষেপ। সরকার যদি দলমত নির্বিশেষে নদীখেকোদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে, তবে আমাদের নদীগুলো রক্ষা পেয়ে আগামী প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে পারে সুপেয় পানির শত-সহস্র নদী। যে নদী শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয়, মানবিক শ্রীবৃদ্ধিতেও প্রণিধানযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে।