মারুফ হোসেন কমলঃ
ময়মনসিংহ শহরে মশক নিধনে নতুন কর্মপরিকল্পনায় সফলতা পেয়েছে সিটি কর্পোরেশন (মসিক)। বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছরে শহরে মশার উৎপাত কম বলে দাবি তাদের। এই দাবির সাথে দ্বিমত নেই নগরবাসীরও। একই সাথে সিটি এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অতি নগন্য।
এর আগে সিটির ২-১জন বাসিন্দা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিলেও বর্তমানে ডেঙ্গু নামক রোগের কথা যেন ভূলেই গিয়েছে নগরীর সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্য বিভাগও বলছে, ডেঙ্গু বিহীন সিটি কর্পোরেশন এলাকা হওয়ার মাধ্যমে কাজের সফলতার প্রমাণ দেয়।
এই সফলতা এনে দিয়েছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মশক নিধন ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নানের পরিশ্রম আর কাজের কর্মতৎপরতা। দুঃখ জনক হলেও সত্য আব্দুল মান্নান ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন হাওয়ার পুর্বে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান এডভোকেট আল নুর তারেক এর সময় থেকে কাজ নাই মুজুরি নাই (মাষ্টার রোল) ভিত্তিতে চাকরী করলেও আজো তার চাকরী স্থায়ী করণ হয়নি।
মশক নিধনে কাজ করে মসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ। এই বিভাগে কর্মরত আব্দুল মান্নান জানান, ২০১৯ সালে রাজধানী ঢাকার সাথে সাথে ময়মনসিংহের ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। সিটি এলাকায় বেশ ২-১জন ব্যক্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। তখন মশক নিধনে ওই বছরে নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন মসিক মেয়র ইকরামুল হক টিটু। মশক নিধন কার্যক্রমে বাজেট ও জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন কর্মপরিকল্পনায় টানা এক বছর কাজ করার পর চলতি বছরে সফলতা পেয়েছেন তারা।
পরিচ্ছন্ন বিভাগের ইনচার্জ আব্দুল মান্নান বলেন, উড়ন্ত মশা নিধনের চেয়ে লার্ভা ধ্বংসের দিকে বেশি জোর দিচ্ছেন তারা। লার্ভা ধ্বংস করা গেলে উড়ন্ত মশার উৎপত্তির সম্ভবনা থাকে না। এক্ষেত্রে কেরোসিন ও ফার্নেস ওয়েলের সংমিশ্রণে তৈরি এলডিও অর্থ্যাৎ লাইট ডিজেল ওয়েল ব্যবহার করা হয়। বাজারের সাধারণ লার্ভা ধ্বংসের ওষুধ অ্যাডালটিসাইডের তুলনায় এলডিও সস্তা ও কার্যকরী। প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার লিটার এলডিও ছেটানো হয়। একই সাথে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে নিয়মিত ডেঙ্গু নিধন অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিভিন্ন সময় জরিমানা করে নগরবাসীকে সতর্কও করা হচ্ছে।
শুরুতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুরো সিটি এলাকায় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে মশার উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করা হয়। পরে কাজ শুরু করেন তারা। গত বছর কোভিডকালীন সময়ে দুই-তিন শিফটেও কাজ করেছেন বলে জানান মশক নিধন কার্যক্রমের সুপার ভাইজার। তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, ফগার মেশিনেই কেবল মশা নিধন হয়। ফগার মেশিনে প্রচুর ধোয়া হয়। ফলে আমাদের কার্যক্রম মানুষের চোখে পড়ে। তবে বেশি কার্যকরী এলডিও। ডেঙ্গুবাহী মশার উৎপত্তিস্থলে এলডিও নিয়মিত ছেটানো হয় বলে ডিম পাড়ার আর সুযোগ থাকে না। তারপরও উড়ন্ত মশা নিধনে নিয়মিত ৫০-৬০টি ফগার মেশিন দিয়ে কাজ করেন কর্মীরা।’
নগরবাসী বলেন, ‘গত দুই বছরের তুলনায় ময়মনসিংহে ডেঙ্গু রোগী কম। যেহেতু রোগীর সংখ্যা কম সুতরাং সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রমের সফলতা আছে। তবে আরেকটু জোরদার করতে হবে। উড়ন্ত মশাও মারতে হবে। তবে উড়ন্ত মশাও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কম।’ নগরীর অন্তত দশজন বাসিন্দার সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাদের মতেও, অন্যান্য বছরের তুলনায় মশার উপদ্রব কম। পন্ডিত পাড়া,নতুন বাজার,পচা পুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘অন্যান্য বছর এই সময় দরজা-জানালা খোলা যেত না। এই বছর দরজা- জানালা খুলে রাখা যায়।
সুত্র জানিয়েছে - ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের জননন্দিত মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু'র নির্দেশনা মোতাবেক মসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন মশক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নান এর বহুমুখী কর্মতৎপরতায় ময়মনসিংহ মহানগরে দিনরাত সেবা প্রধান করে যাচ্ছে। তিনি মসিকের প্রতিষ্ঠাকালীন মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু মহোদয় এর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছে ৩৩ টি ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া মহল্লায়।
তবে মশক নিধন ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের এই কৃতিত্ব একার নয় বলছেন ইনচার্জ আব্দুল মান্নান। এই সফলতার সাথে নগরবাসীরও অবদান আছে বলে জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ময়মনসিংহ সিটি সারাবছরব্যাপী মশার ওষুধ ছেটাই। মানুষ ঘুম থেকে জাগার আগেই আমরা মশার ওষুধ সারা শহরে ছেটাই। গতবছরও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কম ছিল। এর কৃতিত্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগরবাসীদেরও। তাদের তত্ত্বাবধানে প্রতি ওয়ার্ডে টিম করে মশক নিধন কার্যক্রম চলেছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা নিয়মিত কাজ করছি। তারপরও মানুষের সচেতনতা আরও বেশি প্রয়োজন। নিজের বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখা, পানি জমতে না দেওয়ার দায়িত্ব সকলের। সকলে মিলে কাজ করলে মশক নিধন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ৩৩ কাচারী রোড, ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবি সমিতির ৪ ও ৫ নং ভবনের বিপরীত পাশে।
ঢাকা কার্যালয়ঃ কে ৭৪/৫,কোরাতলী এআই ইউবি রোড খিলক্ষেত, ঢাকা, ১২২৯।
যোগাযোগঃ 01917925375 /01736554862 / 01721927699
প্রকাশক: মারুফ হোসেন কমল