চীফ রিপোর্টার - ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কাজী আব্দুল্লাহ। অধিক লাভের আশায় ভুয়া কাজিদের পরোক্ষ মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে, নেপথ্যে রয়েছে একটি প্রভাবশালী চক্র। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে প্রকাশ্যে বাল্য বিয়ে পড়াতে সমর্থ হচ্ছে এসব সহকারী কাজীরা।
ঘাগড়া ইউনিয়নের কাজী আব্দুল্লাহ,তিনি নিজের ইচ্ছেমত একাধিক লোক নিয়োগ দিয়েছেন।তাদের মধ্যে কাজী আব্দুল্লার দুই ভাই,এছাড়াও শাজাহান,ভাবখালীর আরফান মাস্টার, ভাবখালী নারায়নপুরের গিয়াস উদ্দিন কে।পার্শ্ববর্তী ভাবখালী ইউনিয়নে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কাজীর দায়িত্ব নেন কাজী আব্দুল্লাহ! দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই অধিক লাভের আশায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। এলাকায় ব্যাপক সমালোচিতও হয়েছেন! জনশ্রুতি রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মেনেজ করে, একাধিক কাবিন রেজিষ্টার বহি নিয়ে হরহামেশা কাবিন করছে তার লোকেরা। এসব ভূয়া কাজিদের বেপরোয়া কার্যকলাপে, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ে পড়ানো হচ্ছে হরহামেশাই,এসব বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে, এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্হানীয় এক ইউপি সদস্য ।
এই এলাকার জন্য নির্ধারিত নিবন্ধন প্রাপ্ত কাজির ডিআর বই ব্যবহার না করে অন্য এলাকার কাজির ডিআর বই নিয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিয়ে পড়ানো হচ্ছে হরহামেশাই। তাদের দৌরাত্ব্যে বঞ্চিত হচ্ছে অত্র এলাকার জন্য নিবন্ধন প্রাপ্ত কাজি। এ বিষয়ে তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উপর দায়িত্ব থাকলেও অজ্ঞাত কারণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কাজী আব্দুল্লাহ।
দীর্ঘ ২০ বছর যাবত কোন রকম বৈধ কাজির সনদ ও কাগজপত্র ছাড়াই বিয়ে পড়িয়ে আসছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার ডিআর বই ব্যবহার করে অধিক টাকার বিনিময়ে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিবাহ পড়াচ্ছেন। এসব বাল্যবিয়ে পড়িয়ে ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন অংশীদারসহ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি।
তার ছত্রছায়ায় একাধিক শহরে দেদারছে চালাচ্ছে বিবাহ রেজিস্ট্রি ও তালাক নিবন্ধন। অধিক মুনাফার আশায় আদালত চত্বরে কর্মরত বেশ কিছু আইনজীবী তাদের সেরেস্তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন এই সব ভুয়া কাজিদের। ফলে আইনজীবীদের সেরেস্তা ব্যবহার করেই এসব বাল্যবিবাহ পড়ানো হচ্ছে।
কোর্ট চত্বর এলাকা ব্যবহার করে অবাধে চলছে ভুয়া জন্মসনদ, নকল কাবিননামা আর জাল সিল-স্বাক্ষরে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রি।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা সহ ফুলপুর পৌরসভার ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের কাজী মোঃ রেজাউল হকের আলীম পাশের শিক্ষাসনদ ভূয়া বলে অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়াও ফুলপুর উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে বেপরোয়া হয়েছেন কাজী রেজাউল হক। তিনিও নিজের মনমত পয়ারী ইউনিয়নে নিয়োগ দিয়েছেন প্রায় ১০/১২ জন লোক। প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে আসা অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেফিট করে প্রাপ্তবয়স্ক বানিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
গ্রাম অঞ্চলে এক শ্রেনীর দালালদের মাধ্যমে গুঞ্জণ আছে কোর্ট চত্বরে গেলে অভিভাক ছাড়াই বিয়ে পড়ানো যায়। এর সুযোগ নিচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরী ও ঘর পালানো প্রেমিক-প্রেমিকারা।
এসব কাজি তাদের প্রয়োজনে নকল কাবিননামা, তালাকনামা ও বয়স প্রমানের এফিডেফিটের ঘোষণাও দিচ্ছেন। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন আতঙ্কে রয়েছেন তেমনি পরকীয়ার বলি হচ্ছে রেমিটেন্স যোদ্ধা (প্রবাসীদের) সংসার।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মো. শাহিন মিয়া জানান, তার কোন বৈধ কাজির কিম্বা বিবাহ পড়ানোর অনুমোদন নেই। তিনি সাব-কাজি হিসেবে কাজ করেন। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিবাহ পড়ান তিনি,তবে বয়স প্রমানের কাগজপত্র জমা না দিলে কাবিনের সার্টিফাইড কপি দেন না তিনি।
তিনি আরো জানান, আমি ছাড়াও আরো অনেকেই কোর্ট চত্বরে বিয়ে পড়াচ্ছে, তারা হচ্ছে-মো. জয়নাল আবেদিন, মো. হামিদুল ইসলাম,আকরাম হোসেন ও কায়সার আহম্মেদ সহ আরো অনেকেই। তবে বিষয় টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন স্হানীয় সচেতন মহল।
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ ৩৩ কাচারী রোড, ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবি সমিতির ৪ ও ৫ নং ভবনের বিপরীত পাশে।
ঢাকা কার্যালয়ঃ কে ৭৪/৫,কোরাতলী এআই ইউবি রোড খিলক্ষেত, ঢাকা, ১২২৯।
যোগাযোগঃ 01917925375 /01736554862 / 01721927699
প্রকাশক: মারুফ হোসেন কমল