মারুফ হোসেন কমলঃ
ময়মনসিংহের বাজার গুলোতে লবণেী মুল্যবৃদ্ধির গুজব ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তেই গুজব ঠেকাতে গত ১৯ই নভেম্বর মঙ্গলবার তৎক্ষণাত বাজার পরিদর্শনে যান ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ হাফিজুর রহমান। লবনের মুল্যবৃদ্ধির গুজব শুনে ময়মনসিংহের ছোটবাজারে লবনের গোডাউন গুলোতে ক্রেতাদের লাইন শুরু হলে মঙ্গলবার বিকালে তিনি সরাসরি গোডাউন ও বাজারের দোকানগুলোতে লবনের মুল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের সাথে দফায় দফায় কথা বলেন।
এছাড়াও তিনি সাধারণ মানুষকে পেয়াজ, লবনসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদির মূল্যবৃদ্ধির হয়রানি থেকে বাচাতে ও গুজব ঠেকাতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায়-দফায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করে জিনিসপত্রের বাজার মুল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধারাবাহিক অভিযান ও ভ্রামমান আদালত পরিচালনা করছেন।
এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন- ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব-উল- আহসান, ব্যবসায়ী নেতা মাহবুবুল আলম,উত্তম চক্রবর্তী রকেট, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দীপক মজুমদার,ইকবাল হোসেন,পেশকার আবুল হাসিম,ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন,লবণের পাইকারী ব্যবসায়ী মক্কা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী গোলাম সামদানি শামীম,সুলভ স্টোরের সত্ত্বাধিকারী শংকর বসাক,ফকির ট্রেডার্সের হাবিবুর রহমান ফকির,মদিনা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল করিম,মেসার্স চন্দন ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী চন্দন কান্তি পালসহ অাইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
এসময় তিনি সেখানে কয়েকটি দোকানে লবন কেনাবেচার চালান,বাজার মুল্যের চার্টও দেখেন। পরে তিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায়-দফায় মতবিনিময় করে লবনের মুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাময়িক ভাবে প্রতি খুচরা বিক্রেতাদের নিকট ১০ কেজির বেশী লবন বিক্রি করাসহ প্রত্যেক ক্রেতার নাম-ঠিকানা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা। সেই সাথে লবনের প্যাকেটের গায়ে লেখা মুল্যের বেশী দামে লবন ক্রয় না করতে সকলকে আহবান জানান এবং কেউ যদি বেশী দামে লবন বিক্রি করে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর আহবান জানান।
তিনি বলেন-ময়মনসিংহে লবনের কোন ক্রাইসিস নেই, পর্যাপ্ত লবন মজুদ আছে। সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে এটি একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রমূলক গুজব, তাই এ গুজবে কাউকে কান না দেওয়ার আহবান জানান চৌকস ইউএনও শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন-বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের প্রায় ১৯টি দেশে লবণ রপ্তানী করা হয়। সুতরাং যেখান থেকে বাইরে লবন রপ্তানী হয় সেখানে লবনের ঘাটতির প্রশ্নই উঠেনা। ১৯৭৪ সালেও বঙ্গবন্ধুর সরকারকে বিপাকে ফেলতে লবন নিয়ে চক্রান্ত হয়েছিলো। সেই চক্রের অনুসারীরাই বর্তমান সরকারকে বিপাকে ফালানোর একটা অপকৌশল হিসেবে গুজব ছড়াচ্ছেন। তিনি লবনের বাজার মুল্য নিয়ন্ত্রনে সদর উপজেলার সিটি করপোরেশন এলাকাসহ বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের টিম পাঠালে চরপাড়া এলাকায় শহিদুল্লাহ নামক এক ব্যবসায়ীকে অতিরিক্ত মুল্যে লবণ বিক্রি করায় দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড জরিমানা করেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এম সাজ্জাদুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমান আদালত টিম।
লবণের মুল্য নিয়ন্ত্রনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদারকির বিষয়টি বাজারে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি লবন প্যাকেট নির্ধারিত মুল্যেই বিক্রি শুরু করেন ক্রতাদের নিকট। এতে ইউএনও’র ভূয়সী প্রশংসায় মেতে উঠেন সাধারণ ক্রেতারা।
এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ হাফিজুর রহমান পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে যাতে লবণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য বহণকারী যানবাহন সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকে সে জন্য তিনি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
দোকানদারেরা জানান, প্রতি কেজি লবণ প্যাকেট নির্ধারিত মুল্যে খুচরা ও পাইকারী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। লবণের কোন ঘাটতি নেই। তাই কাউকে বিচলিত না হওয়ার আহবান জানান। ইউএবও শেখ হাফিজুর রহামনের ইতিবাচক কর্মকান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন