মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৮জনের মরদেহ মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার বটতলা নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লৌহজং উপজেলার কনকসার বটতলা গ্রামের বাহ্মনগাঁও উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে হলদিয়া সাতঘড়িয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এছাড়া অপর নিহত মাইক্রোবাস চালক বিল্লালকে (২৭) তার নিজ গ্রাম শ্রীনগরের বেজগাওয়ে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ দিকে লৌহজংয়ের কনকসার গ্রামে বইছে শোকের মাতম। বর রুবেল কোন মতেই মেনে নিতে পারছেন না এই মর্মান্তি দুর্ঘটনার বিষয়টি। তিনি শুধুই প্রলাপ বকছেন আর বলছেন, ‘আমি কেন এই নিষ্ঠুর পরিণতির শিকার হলাম। আমাকে কেন আল্লাহ এত বড় শাস্তি দিলেন।’
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার দুপুরে বর রুবেল তার পরিবারের ১২ জনকে একটি মাইক্রোবাসে( ঢাকা মেট্রো চ ১৫-৫৫৬৬) উঠিয়ে দেন। নিজে অপর একটি প্রাইভেটে চড়ে বিয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকার কামরাঙ্গিরচর এলাকায় রওনা দেন। পথিমধ্যে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবোঝাই বাসের সংঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে তার পরিবারে আত্মীয়স্বজন মিলে ৮ জন ও মাইক্রো চালক নিহত হয়। আহত হয়েছে অন্তত ১১ জন।
নিহতরা হলো- বর রুবেলের বাবা আব্দুর রশিদ বেপারী (৬০), বোন লিজা (২৩), চাচা আব্দুল মফিজ (৫৮), ভাবী রুনা (২৫), ভাতিজা তাহসিন (০৩), ভাগ্নি তাবাসুস অবনি (০৫), মামাতো বোন রেনু (১০), ফুফাত ভাই জাহাঙ্গীর (৪৫), প্রতিবেশী কেরামত বেপারী (৬০) ও মফিজুল (৬০) এবং মাইক্রো চালক বিল্লাল (৪০)। এদের মধ্যে ৮ জনের বাড়ি জেলার লৌহজং উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের কনকসার বটতলা গ্রামে। এবং মাইক্রোচালক বিল্লালের বাড়ি জেলার শ্রীনগর উপজেলার বেজগাও গ্রামে।
এ দিকে শুক্রবারের এই মর্মমান্তি সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে কেউ মামলা করতে না চাইলেও স্থানীয় থানা পুলিশ বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম বার।
তিনি আরো জানিয়েছেন- এ খবর পেয়েই ঘটনাস্থল তিনি এবং জেলা প্রশাসক মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার পরিদর্শন করেছেন। এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাসহ প্রতিটি পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের চিকিৎসার খবর নেওয়া হচ্ছে এবং তাদেরকেও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা শাহীনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।