২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ খেলাধুলা, ময়মনসিংহ ভালুকায় ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর এক মাসে বেড়েছে নাগরিক সেবার মান।
২৫, জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:১১ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

আরিফ রববানী ময়মনসিংহ

প্রতিভা কোনো সীমাবদ্ধ সিদ্ধিতে সন্তুষ্ট থাকে না, অসন্তোষই তার জয়যাত্রা পথের সারথী’। এটাই সত্য একজন কর্মদক্ষ, ন্যায় পরায়ন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা পারেন দক্ষতার মাধ্যমে একটি উপজেলার আমূল পরিবর্তন ঘটাতে। এমনই একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ১৭ ডিসেম্বর তিনি ভালুকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি উপজেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়াসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি ও উপজেলায় বাল্যবিবাহ, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ইভটিজিং বন্ধ করতে দিনরাত শ্রম দিচ্ছেন। এমনকি
দায়িত্বপালনকালীন এক মাসে তিনি ভালুকার শ্রমিক অসন্তোষ মোকাবেলা করা, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া আদায়, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও প্রশাসনিক কাজ-কর্মে গতি ফিরিয়ে আনতে চৌকস প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেও সুনাম অর্জন করেছেন

জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জনের মধ্যদিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ কর্মস্থলে ১ মাস পূর্ণ করেছেন।

এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’-এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ১৭ জানুয়ারি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ও জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২০২৫ এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ময়মনসিংহ সদর উপজেলা বনাম ভালুকা উপজেলা মধ্যকার খেলায় ৬ উইকেটের ব্যবধানে জয় লাভ করে ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জন করেন ভালুকা উপজেলা ক্রিকেট দল। বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম।
ভালুকা উপজেলা ক্রিকেট দলের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। এই বিজয়ে ভালুকা ক্রিকেটপ্রেমী সাধারণ মানুষ আনন্দিত। তারা বিজয়ী ক্রিকেট দল ও দলের নেতা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিনন্দন জানান। ৫ আগষ্টের পর প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া প্রশাসন রুটিন ওয়ার্কে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এই অবস্থা থেকে প্রশাসনে কর্মতৎপরতা ফিরিয়ে আনতে তিনি পেশাদারিত্বের উজ্জল স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধায় তিনি ভালুকা প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।ক্লাবের সদস্য সিনিয়র সাংবাদিকগণ তাদের মতামত প্রদান সহ উপজেলার অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করে তা উপস্থাপন করে ভালুকার স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন, মাছে মুরগির বিষ্ঠা বন্ধ, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ইভটিজিং বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসনের কঠিন হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, খেলোয়াড়দের প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা ছিলো এবং উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সকল নেতৃবৃন্দ ও খেলোয়াড়দের আন্তরিক প্রচেষ্টাই সফলতা এনে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ৫ আগষ্টের পর নানাবিধ কারনেই মাঠ প্রশাসনে কাজের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সামলানোর পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ, পৌরসভায় দায়িত্ব পালন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি’র পদে থাকার কারনে নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাজের পরিধি আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কাজের চাপ বৃদ্ধি পেলেও এ উপজেলার নাগরিক সেবার মান একটুও কমেনি। বরং আগের চেয়ে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুন। তারুণ্য উৎসবের উপলক্ষে আয়োজিত জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জন তারই দৃষ্টান্ত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানান-ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর দায়িত্বে গত এক মাসে বদলে গেছে ভালুকার নাগরিক সেবার চিত্র। এর আগেও সাধারণ মানুষের মুখে অনেক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শোনা যেতো। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সেই তালিকার বাইরে। তার ‘জনসেবার’ মানসিকতার ফলে বদলে গেছে উপজেলার নাগরিক সেবার চিত্র। দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডে ফিরে এসেছে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা। এই কর্মকর্তার ব্যবহারেও খুশি উপজেলার বাসিন্দারা। এমনটাই শুনা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের মুখে।

ভালুকায় ভূমি সেবায়ও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এ উপজেলায় সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার এক দিনের মধ্যে নামজারি কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে ইউএনওর নির্দেশনায়, যা বেশ সাড়া ফেলেছে। এ ছাড়া পরিবেশ রক্ষা এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে খাল-নালা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এসব বিষয়ে ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সেবক। যেখানেই চাকরি করেছি, সবসময় নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নাগরিকদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, যেদিন এখানে যোগদান করেছি, সেদিনই বলেছি এ উপজেলা আমার। যতদিন আছি এভাবে সেবা দিয়ে যেতে চাই। সবার সহযোগিতায় ভালুকাকে একটি আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।