১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ অপরাধ, সারা বাংলা ফরিদপুরের নগর কান্দায় ভুয়া র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতির সময় ০৫ জন আসামী র‌্যাব-১০ কর্তৃক গ্রেফতার।।
২৯, জুলাই, ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

চীফ রিপোর্টার: র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব নিয়মিতভাবে সন্ত্রাসবাদ, সংঘবদ্ধ অপরাধ, অবৈধ অস্ত্রধারী চক্র, মাদক চোরাচালান, এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিয়ে সংঘটিত ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে।

 

ডাকাতি ও চাঁদাবাজি দমনেও র‌্যাব একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে প্রশংসা অর্জন করেছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে র‌্যাবের এ প্রচেষ্টা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। ভিকটিম স্বর্ণ ব্যবসায়ী জয়দেব আধ্য (৫৩) ও তার ভাই বিশ্বনাথ আধ্য (৫৭) উভয় পিতা- মৃত মনিন্দ্র নাথ আধ্য, সাং- খালিশ খালি, থানা- পাটকেল ঘাটা, জেলা- সাতক্ষীরা’দ্বয় ব্যবসার প্রয়োজনে *গতকাল ২৮/০৭/২০২৫ তারিখ রাজধানীর তাঁতীবাজার এলাকায় জুয়েলারী ষ্টোর হতে জুয়েলারী তৈরীর ডাইস/যন্ত্রাংশ ক্রয় করে ফুলবাড়িয়া-গুলিস্থান হতে বিকাল অনুমান ১৬.১০ ঘটিকায় টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস বাস যোগে* সাতক্ষীরা পাটকেল ঘাটার উদ্দেশ্যে রওনা করে। পরবর্তীতে সন্ধ্যা *অনুমান ১৮.০০ ঘটিকায় ফরিদপুর জেলার নগর কান্দা থানাধীন জয় বাংলা মোড় এলাকায়* পৌছালে একটি মাইক্রোবাস এসে র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে বর্ণিত বাসটি *থামিয়ে ৩/৪ জন লোক র‌্যাবের কটি পরিহিত* অবস্থায় বাসের ভিতরে প্রবেশ করে *ভিকটিম’দ্বয়কে জোড় পূর্বক নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে তাদের চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে* এবং ভিকটিম’দ্বয় তাতে ভয়ে হতভম্ব হয়ে পড়ে। এরপর আসামীগণ ভিকটিম’দ্বয়ের নিকট হতে *নগদ ২,৭০০/- এবং ক্রয়কৃত মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে* তাদেরকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এরই ধারাবাহিকতায় *গতকাল ২৮/০৭/২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ১৮.৩০ ঘটিকায়* র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় *ফরিদপুর জেলার নগর কান্দা জয় বাংলা মোড় এলাকা হতে মাইক্রোবাস সহ ঘটনায় জড়িত ০৫ জন ভুয়া র‌্যাব গ্রেফতার করে* এবং ভিকটিমদ্বয়কে উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃতদের নাম ১। *দিদার (২৯),* পিতা- গোলাম সরোয়ার, সাং- হিদাদাংগা, থানা- আলফাডাঙ্গা, জেলা- ফরিদপুর, ২। *মো: সাইফুল ইসলাম (৩০),* পিতা- কাচু শেখ, সাং- নবীজান, থানা- সুন্দরগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধা, ৩। *মিন্টু গাজী (৪৫),* পিতা- মৃত মিনা গাজী, সাং- মদনা, থানা- চন্দ্রা, জেলা- চাঁদপুর, ৪। *মো: জামিল (৩২),* পিতা- মনির হোসেন, সাং- আন্ডারচর, থানা- কালকিনি, জেলা- মাদারীপুর ও ৫। *স্বপন খান (৪৫),* পিতা- মৃত নুর মোহাম্মদ খান, সাং- গয়ঘর, থানা- জাজিরা, জেলা- শরিয়তপুর বলে জানা যায়। অভিযান পরিচালনাকালে একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত উত্তেজিত জনতা ডাকাতদের ঘেরাও করে মাইক্রোবাসের চারপাশ ভাংচুর করে এবং ০২ জন ডাকাত মো: *সাইফুল ইসলাম (৩০) ও মো: স্বপন খান (৪৫)’দ্বয় দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে উত্তেজিত জনতা তাদেরকে হাতেনাতে ধৃত করে মারপিট করাকালে* র‌্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল তাদেরকে উদ্ধার পূর্বক গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালে আসামীদের নিকট হতে *০৪ টি কালো রংয়ের র‌্যাব জ্যাকেট, ০৩ টি কালো রংয়ের র‌্যাব ক্যাপ, ০১ সেট কালো রংয়ের রেইন কোট, ০২ জোড়া হাতকড়া, ০১ টি কালো রংয়ের ব্যাগপ্যাক, ০২ টি ওয়াকি টকি সেট, ০১ টি ওয়াকি টকি সেটের চার্জার, ০১ টি লিথিয়াম ব্যাটারীর চার্জার, ০২ টি কালো রংয়ের পিস্তল কাভার, ০১ টি কালো রংয়ের পিস্তল সদৃশ গ্যাস লাইট, ০১ টি লাল রংয়ের লেজার লাইট, ০১ টি কালো রংয়ের সেল্ফ ডিফেন্স স্টানগান, ০৩ টি মোবাইল ফোন ও ০১ টি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। আসামী মিন্টু গাজী (৪৫) চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে *অস্ত্র ও ডাকাতি মামলাসহ ০৩ টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মো: সাইফুল ইসলাম (৩০) গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা। সে ভাড়ায় ড্রাইভিং পেশার আড়ালে ডাকাত চক্রটির সাথে সক্রিয়ভাবে ডাকাতি করত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, চুরি ও দস্যুতা মামলাসহ মোট ০৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও *কুমিল্লা জেলার চৌদ্দ গ্রাম থানার মামলা নং- ৩০, তারিখ- ৩০/১০/২০২৪; ধারা- ১৭০/১৭১/৩৯৪ পেনাল কোড ১৮৬০ এর আসামী সাইফুল ও আসামী জামিল একই সাথে জেল হাজতে কারা ভোগ করেছেন। গ্রেফতারকৃত দিদার (২৯) ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাদিক *ডাকাতি মামলাসহ ০৮ টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত স্বপন খান (৪৫) মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় *চুরি, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ ০৪টি হত্যা মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মো: জামিল (৩২) শরিয়তপুর জেলার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে ঢাকা জেলার ধামরাই *থানায় ০১টি হত্যা মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।এই ধরনের ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আন্তঃজেলা বাসগুলোতে যাত্রী পরিবহনের পূর্বে স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারণ পূর্বক যাত্রা শুরু করা এবং প্রতিটি গাড়িতে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হলে আসামীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে অপরাধ নিরসনে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করা সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিলেই তা যাচাই করুন। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন।