শামীম খান (ময়মনসিংহ)
জৈষ্ঠ্যের খরতাপে মানুষের মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে মৌসুমী ফল। দেশীয় ফলে বাজার সয়লাব। সারা দেশে বাহারি ফলের সমারোহ। এর ব্যতিক্রম নয় ময়মনসিংহের গৌরীপুরেও।
মৌসুমী ফলে ছেয়ে গেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার হাট-বাজার ও অলি-গলি। এর মধ্যে দু’একটি ফল ছাড়া সবগুলোর দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে।
সরেজমিনে শুক্রবার (৪ জুন ) উপজেলা পৌর শহরের বিভিন্ন ফল দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি দোকানে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফলের সমারোহ। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস ও তাল ইত্যাদি। এছাড়াও বেল, বাঙ্গি, তরমুজ, পেঁপেসহ আরও বিভিন্ন ধরনের ফল ।
গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে বর্তমানে ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে কাঁঠাল, আনারস, জাম ও আম। বাজার দর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতি একশত লিচু বিক্রি করছেন ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়, প্রতি পিস কাঁঠাল ছোট সাইজ ৪০-৫০ টাকায়, মাঝারি সাইজ ৮০-১২০ টাকা ও বড় সাইজ ১৩০-২০০ টাকায়। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে মিষ্টি ও রসালো আম। ক্রেতা-বিক্রেতারা মনে করছেন আগামী সপ্তাহান্তেই বাজারে আরো প্রচুর আম আসবে।
ফল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, এখন দেশীয় ফলের দাম অনেক কম। যেমন মল্লিকা জাতের আম প্রতি কেজি ৪০ টাকা, হিমসাগর ৪০ টাকা, নকলা ৪০ টাকা, রাজশাহী ৪৫ টাকা, লেংরা ৬০ টাকা, আম্রপালী ৬০ টাকা। অন্যান্য ফলের মধ্যে আনার ৪০০ টাকা কেজি, জামের কেজি ৪০-৫০ টাকা, পাকা পেঁপে কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা। তাল শ্বাস প্রতি পিস ১০থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ১০ থেকে ৮০ টাকা পিস।
তিনি আরো বলেন, দেশীয় ফল হিসেবে আম, জাম, কাঁঠাল গ্রাম থেকে কৃষকরা সরাসরি বাজারে নিয়ে আসায় আমাদের বিক্রি আগের তুলনায় কমে গেছে তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে মিষ্টি ও রসালো আম বাজারে আসলে আমের বেচাকেনা জমে উঠবে।
তাহের মিয়া নামে এক ফল ক্রেতা জানান, বড় সাইজের ১০০ পিস লিচু কিনেছি ৩০০ টাকা দিয়ে কিন্তু এই লিচু ১৫ দিন আগে ১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি। বাজারে ভরপুর মৌসুমি ফল থাকলেও কিছু ফলের দাম চড়া বলে মনে করেন এ ক্রেতা।
রহিম নামে অন্য এক ক্রেতা, সাধারণ মানুষের ক্রয় মতার মধ্যে রাখতে এবং বিষাক্ত রাসায়নিকমুক্ত ফল বিক্রিতে প্রশাসনকে বাজার মনিটরিংয়ের অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চাই ফরমালিন মুক্ত নিরাপদ ফল এ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ক্রয়-বিক্রয় হোক। অনেক সময় কিছু অসাধু লোক কর্তৃক বেশি লাভের আশায় অনেক সিজনাল ফলমূলে ফরমালিন,কার্বাইড,পটাসিয়াম, পারম্যাংগানেটসহ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসবের ভয়ে মানুষ ফল খেতে চায় না। ফলের খোসা ফেলে দিলে ও পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এ থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া সম্ভব। কোথাও ভেজাল মেশানোর সংবাদ পেলে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হবে।